দেশের রাজনীতিতে দক্ষিণপন্থিদের উত্থান দেখছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এটা নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন বলেও জানান।
সম্প্রতি দেশের প্রথমসারির একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ উদ্বেগের কথা জানান।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমিও (দক্ষিণপন্থিদের উত্থান) দেখছি। সে জন্য আমি উদ্বিগ্ন। আমি বাংলাদেশকে সবসময় একটা সত্যিকার অর্থে উদারপন্থি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ হিসেবে দেখতে চাই এবং এখানে গণতন্ত্র হবে সবচেয়ে বড় বিষয়।’
তিনি বলেন, ‘সেই জায়গায় যদি এখন এমন এমন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান হয়, যারা গণতন্ত্রেই বিশ্বাস করে না। পরিষ্কার ঘোষণা দিয়ে করে না। আবার তারা নিজেরা জোর করে চাপিয়ে দিতে চায় মতবাদকে, এটা নিঃসন্দেহে এলার্মিং সিচুয়েশন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কিছু কিছু দলের মধ্যে এমনও কথা আছে যে মহিলাদের তারা কিছুতেই সামনে আনতে চায় না। মহিলাদের তারা রাজনৈতিক ক্ষমতা তো দূরের কথা, তারা সামাজিক ক্ষমতায়নও করতে চায় না। এসব দলের যদি উত্থান হয় এই দেশে, তাহলে তো পিছিয়ে যাওয়া ছাড়া কোনো পথ থাকবে না।’
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আপনি প্রায়ই বলতেন, নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার না দিলে, ভিন্নমতের দমন দেশের উগ্রবাদের উত্থান ঘটাতে পারে। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর এমন উত্থানের কিছু কিছু আলামত প্রকাশ পাচ্ছে। এর দায় কাকে দেবেন?- এ প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এ দায় সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগের। এক নম্বরে শেখ হাসিনা দায়ী। আমরা বারবার তাকে সতর্ক করেছি, ওই দেশকে সতর্ক করেছি যে একটি সেন্ট্রিস্ট দল, গণতান্ত্রিক দল বিরোধী দলকে (বিএনপি) কখনোই দমন করে শেষ করে দিয়েন না। তাহলে ডানপন্থিদের উত্থান হবেই, কেউ ঠেকাতে পারবে না। আজকে ঘটনাটা সেই দিকেই যাচ্ছে।’
কিছু শরিক দলের বিএনপির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘এটা হচ্ছে গণতান্ত্রিক ব্যাপার। কতগুলো দল আছে যারা মার্ক্সবাদে, সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করে। তারা ৩১ দফা তৈরি করার সময়ও বলেছিল, দেখেন সব বিষয়ে আমরা একমত নই। ঠিক আছে, আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে একমত হয়ে একসঙ্গে আন্দোলন করে একসঙ্গে সরকার গঠনের কথা বলেছি। আমাদের তো আন্তরিকতার মধ্যে এতটুকু ফাঁক নেই, আমরা সেটা প্রমাণ করেছি, এখনো করছি।’
সরকার গঠন করতে পারলে জাতিকে কেমন শাসন উপহার দেবে বিএনপি?- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কেমন সরকার হবে বলাটা হবে এই মুহূর্তে অবাস্তব কথা। তবে একটা কথা পরিষ্কার, আমরা সবার আগে যেটা গুরুত্ব দেব সেটা হচ্ছে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা এবং অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করা। আর রাজনৈতিক কাঠামোটাকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করা হবে। আর (জাতীয় ঐকমত্য কমিশন) সংস্কারের মধ্য দিয়ে যেগুলো আসবে, সেগুলো এবং যেগুলো বাকি থাকবে, সেগুলোকে আমরা জনগণের সামনে নিয়ে আসব। অর্থাৎ আমরা বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে একটা আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাই।’