বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তার ছেলে তারেক রহমান দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলে তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনের একটি কমিউনিটি সেন্টারে যুবদল আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় বক্তব্য দিতে গিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
দোয়া মাহফিলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, ‘অনেক সংকট-উৎকণ্ঠার মধ্যেও খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় আলোর রেখা দেখা যাচ্ছে এবং তিনি চিকিৎসা নিতে পারছেন। তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকার মিথ্যা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে কারাগারে পাঠিয়েছিল এবং সঠিক সময়ে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করলে আজকের এই অবস্থা হতো না।’
খালেদা জিয়া বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। গত বছরের ৫ আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি মুক্তি পান। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি তিনি লন্ডনে যান। দীর্ঘ ১১৭ দিন লন্ডনে অবস্থান শেষে গত ৬ মে তিনি দেশে ফেরেন।
দেশে ফেরার পর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসনকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। গত ২৩ নভেম্বর থেকে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার ফুসফুসে ইনফেকশন ধরা পড়ে এবং বিএনপির পক্ষ থেকে তার অবস্থা সংকটময় বলে জানানো হয়।
এরপর গত বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) থেকে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নিয়ে চিকিৎসকরা নিবিড়ভাবে চিকিৎসা দিচ্ছেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তার চিকিৎসা চলছে।
এদিকে, গত রাত থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে দুই দিকে ব্যারিকেড বসানো হয়েছে এবং নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। সংশ্লিষ্ট লোকজন ছাড়া অন্যদের ভিড় করতে দেওয়া হচ্ছে না।
উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা জানান, গত রাত ২টার দিকে হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে পুলিশ ব্যারিকেড দেয় এবং আশপাশে কাউকে ভিড় করতে দেওয়া হচ্ছে না। হাসপাতাল সূত্র নিশ্চিত করেছে, রোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত করতে, ভিড় ঠেকাতে এবং খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা জোরদার করতে পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।



