ঢাকা শুক্রবার, ০১ আগস্ট, ২০২৫

জুলাই সনদ নিয়ে কমিশনের বিরুদ্ধে মামলার হুঁশিয়ারি জামায়াতের

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২৫, ০৬:৩৬ পিএম
জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ছবি- সংগৃহীত

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না দিলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২৩তম দিনের মধ্যাহ্ন বিরতিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি বলছে, সনদের আইনি ভিত্তি নেই। কিন্তু আমরা মনে করি, শুধু প্রতিশ্রুতির ওপর নির্ভর করলে হবে না। আইনি ভিত্তি না থাকলে এই সনদ কার্যত মূল্যহীন হয়ে পড়বে। আমরা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছি, আইনি ভিত্তি না দিলে আমরা সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা করব।’

তাহের আরও বলেন, ‘আমরা নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ উভয় ক্ষেত্রেই আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি চাই। গত ৫৪ বছরের নির্বাচন পদ্ধতিতে দলীয়করণ, ভোট ডাকাতি, ভুয়া ভোট, রাতের নির্বাচনসহ নানা অপসংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। এখনই পরিবর্তনের সময়। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ৯০টি দেশে যেভাবে পিআর পদ্ধতি চালু আছে, বাংলাদেশেও তা প্রবর্তন করা দরকার।’

তিনি বলেন, ‘পিআর এখন একটি বৈশ্বিক বাস্তবতা। আফ্রিকা, ইউরোপ, আমেরিকা, এশিয়াসহ সবখানেই এটা বিদ্যমান। ধনী-গরিব কিংবা কালো-সাদার ভিত্তিতে নয়—এটা গণতান্ত্রিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতের পথ। আমরা কমিশনকে জানিয়ে দিয়েছি, আমরা পিআর চাই, এবং বেশিরভাগ দলও পিআরের পক্ষেই মত দিয়েছে।’

আইনি ভিত্তির প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে তাহের বলেন, ‘এই সংলাপ, সময়, পরিশ্রম—সবকিছুর তখনই মূল্য থাকবে, যখন এটি বাস্তবায়ন হবে। শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়ে লাভ নেই, বাস্তবায়নই মুখ্য। আইনি ভিত্তি ছাড়া এই সনদ ‘জিরো’ হয়ে যাবে। এমন সনদে সই করা, আর না করা একই কথা।’

তিনি বলেন, ‘এই সরকারের মেয়াদেই চার্টার বাস্তবায়ন সম্ভব। কাল থেকেই শুরু করা যেতে পারে। যারা বলছেন, এখন দেওয়া যাবে না, তারা জাতিকে বিভ্রান্ত করছেন। আমাদের অবস্থান পরিষ্কার—আইনি ভিত্তি ছাড়া সই নয়।’

উচ্চকক্ষ গঠনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘উচ্চকক্ষ আইন প্রণয়ন না করলেও এটি হতে পারে ‘ব্যালেন্স অব অথরিটি’। এটি আইন প্রণয়নের গাইডিং ও কন্ট্রোলিং বডি হিসেবে ভূমিকা রাখবে।’

তাহের আরও বলেন, ‘যদি সরকার আইনি ভিত্তি না দেয় এবং বাস্তবায়নের পথে না এগোয়, তবে এই সংস্কার প্রক্রিয়াকে আমরা অসমাপ্ত ও প্রহসন মনে করব। আমরা জাতির সঙ্গে আর কোনো তামাশা হতে দেব না।’