জুলাই সনদ স্বাক্ষরের আগে সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, গণভোটের মাধ্যমে জনগণের মতামত নেওয়া জরুরি এবং এই দাবিকে কোনোভাবেই উপেক্ষা করা উচিত নয়।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে নির্বাচনি সংস্কারসহ ৫ দফা দাবিতে আয়োজিত গণমিছিলের আগে এক সমাবেশে অধ্যাপক পরওয়ার এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘দেশে পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে যে জনগণ এটি বোঝে না, কিন্তু বাস্তবে দেশের অধিকাংশ মানুষই পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়। এটি জনগণের ন্যায্য দাবি এবং রাষ্ট্র ও সরকারের দায়িত্ব এই দাবি মান্য করা।’
জামায়াত নেতা বলেন, ‘দেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় ফ্যাসিবাদের দোসররা জড়িত এবং তাদের প্রভাবের কারণে প্রশাসনে একটি দলের পছন্দমতো লোক নিয়োগ করা হচ্ছে। এতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা সমান সুযোগ বিঘ্নিত হচ্ছে।’ তিনি সতর্ক করেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী নির্বাচনও বিতর্কিত ও একতরফা হতে পারে।
অধ্যাপক পরওয়ার সরকারের কাছে আহ্বান জানান, জুলাই সনদ স্বাক্ষরের আগে পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি বলেন, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি হয়তো বাংলাদেশের কাছে নতুন, তবে এটি সারা বিশ্বের বহু দেশে কার্যকর ও জনপ্রিয়। বিভিন্ন গোলটেবিল আলোচনা, সেমিনার ও সম্পাদকীয়তে পিআর পদ্ধতির সুফল তুলে ধরা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই জনগণের দাবির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে।’ তিনি আরও বলেন, এই দাবিগুলো শুধু জামায়াতের নয়, সমগ্র জাতির মুক্তি ও কল্যাণেরও দাবি।
জামায়াতের নেতা অভিযোগ করেন, ভিন্ন অপরাধীদের বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠিত হলেও বড় অপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া এখনো সম্পূর্ণ হয়নি। নির্বাচনের আগে এই বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হলে দেশের নির্বাচন একপক্ষের প্রভাবে পরিচালিত হতে পারে।
অধ্যাপক পরওয়ার আরও বলেন, দেশের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে সমান সুযোগ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে। পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় ন্যায্যতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এটি একটি শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক ও জনগণমুখী উদ্যোগ।
গণমিছিলটি বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেইট থেকে শুরু হয়ে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলে অংশ নেন জামায়াতের কেন্দ্রীয়, উত্তর ও দক্ষিণ মহানগরী শাখার শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও হাজারো কর্মী। অংশগ্রহণকারীরা ব্যানার, ফেস্টুন ও স্লোগানের মাধ্যমে তাদের দাবি এবং অবস্থান প্রকাশ করেন।