কেয়ামত পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
রোববার (২০ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার দামলাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপুর বাড়িতে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘জামায়াতের যেসব দাবি, সেগুলো নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতেই করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ না থাকলে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে- এটা জামায়াত সহ্য করতে পারছে না। আমি নিশ্চিত, কেয়ামত পর্যন্ত বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার কোনো সুযোগ নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘জামায়াত ভারতেও আছে, পাকিস্তানেও আছে। এ কারণে তারা জনগণের ভাষা বুঝতে চায় না, শুধু নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে চায়।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপুসহ মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা।
শনিবার (১৯ জুলাই) নরসিংদীর ইটাখোলা মোড়ে শিবপুর উপজেলা বিএনপি আলোচনা সভায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘বিএনপি সংস্কারে বিশ্বাস করে। তবে কুসংস্কারে বিশ্বাস করে না। সংস্কারের নামে কুসংস্কার চলবে না। যারা পিআর পদ্ধতিতে যাবে, সেটা পেছনের রাস্তা। আর বিএনপি চায় সামনের রাস্তা। সামনা-সামনি আসবো আর ভোট দেবো।’
পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, ‘পিআর সিস্টেম ভালো না। সেটা সব দেশে একসেপ্ট না। সুতরাং যারা পেছনের রাস্তা পছন্দ করেন, তারা সামনের রাস্তা পছন্দ করেন না। পিআর সিস্টেমে আপনি কাকে ভোট দেবেন সেটা আপনি জানবেন না। এটা কোনো সিস্টেম না। তা ছাড়া আমার দেশের মানুষ যা বুঝতে অক্ষম, আপনাদের মতো পন্ডিতরা তা গেলানোর চেষ্টা করবেন না।’
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা ধমক দিলে আমরা ভয় পেয়ে যাব, সেটা ভাবা বোকার স্বর্গে বাস করা। ১৯৭১ সালে যে কাজটা বাকি ছিল, সেটা চব্বিশের জুলাইয়ে হয়েছে।’
জামায়াতের উদ্দেশে গয়েশ্বর বলেন, ‘জনগণ যদি একাত্তরের পরাজিত শক্তির কৃতকর্ম ভুলে গিয়ে আপনাদের ভোট দেয়, আমরা সালাম দেব। একাত্তরের পরাজিত শক্তির আস্ফালন আমাদের মতো মুক্তিযোদ্ধারা বেঁচে থাকতে মেনে নিতে পারব না, এ কথা কিন্তু আমরা এখনো বলিনি। স্বাধীনতাযুদ্ধে আপনারা অপরাধ করেছেন, আমরা ক্ষমা করেছি কিন্তু ভুলে যাইনি।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘জুলাই যোদ্ধা ছাত্র ও এনসিপি নেতাদের প্রতি বিএনপি কৃতজ্ঞতা জানায়। তার মানে এই না, লুট করেছি আমি ভাই, সবকিছু একা খাই। গণতন্ত্র আর জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে ১৭ বছর ধরে আন্দোলন চলছিল। বিএনপি ক্ষমতার জন্য পাগল হয়নি, জনগণের ভোটাধিকারের জন্য পাগল হয়েছে। জনগণ বিএনপিকে ভোট দিলে আপনাদের মানতে অসুবিধা কী, জনসম্মুখে বলতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সবচেয়ে বড় সংস্কারক, বিএনপি সংস্কারে বিশ্বাস করে কুসংস্কারে নয়।’