জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্রকে সাংবিধানিক ও জুলাই সনদকে আইনি স্বীকৃতি দিতে হবে।’ একই সঙ্গে এই সনদের ভিত্তিতে প্রস্তাবিত সংস্কারসমূহ বাস্তবায়নের দায়িত্ব অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বলে জানান তিনি।
রোববার (৩ আগস্ট) বিকেল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের ইশতেহার এবং জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবিতে আয়োজিত এক জনসমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
আখতার হোসেন বলেন, ‘জুলাই সনদ এবং জুলাই ঘোষপত্র যাতে বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা হয় সে জন্য বাংলাদেশের জনগণকে পাহারাদারের ভূমিকায় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষেরা যুগের পর যুগ ধরে যে বঞ্চনার শিকার হয়ে এসেছে, সেই বঞ্চনা থেকে মুক্তির জন্যই আমাদের শহীদেরা জীবন দিয়েছেন। আমাদের আহতরা এখনো পর্যন্ত তাদের অপূর্ণাঙ্গ দেহ নিড়িয়ে আমাদের কাছে উপস্থিত হয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘নতুন যে বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখি সেই বাংলাদেশে আমরা বিভাজনের রাজনীতি দেখতে চাই। এই বাংলাদেশের মানুষ হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলমান, এই বাংলাদেশের মানুষ খ্রিষ্টান, বিহারী, চাকমা, সাওতাল, আমরা কারও মধ্যে পার্থক্য করতে চাই না।’
এনসিপির সদস্য সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ রাষ্ট্রটিকে নতুন করে করার জন্য গত বছর এই শহীদ মিনার থেকে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিরোপের ঘোষণা দিয়েছিলেন আমাদের আহ্বায়ক। সেই ধারাকে সমুন্নত রাখতে জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি বাংলাদেশের রাষ্ট্র কাঠামোতে মৌলিক সংস্কারের কথা বলেছে। বাংলাদেশের রাষ্ট্র কাঠামোতে যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা জনগণের কাছে জবাবদিহি করে নাই।
এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা এমন এক রাষ্ট্র ব্যবস্থা চাই, যেখানে প্রধানমন্ত্রী থেকে মেম্বার পর্যন্ত প্রত্যেক জনপ্রতিনিধিকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষেরা বিগত সময়ে ক্ষমতা হস্তান্তরের সময়কালে একদলীয় যে কর্তৃত্ব দেখেছে, যে ব্যক্তিবাদ আন্দোলন দেখেছে, প্রশাসনের যে দলীয়করণ দেখেছে, সামনের বাংলাদেশে আর দেখতে চাই না।’
মৌলিক সংস্কারের প্রয়োজনেই বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণের হাত থেকে বাঁচাতে হবে। বাংলাদেশের বিচার বিভাগকে কোনো দলের কর্তৃত্বের মধ্যে আমরা থাকতে দেব না। বাংলাদেশের সচিবালয়ে যে নীতি নির্ধারণ করা হবে, সেই নীতি যেন জনস্বার্থের পক্ষে হয়, সেটা সততার সঙ্গে জনগণের কাছে উপস্থাপন করতে হবে।
আখতার হোসেন বলেন, ‘মৌলিক সংস্কারের ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্যবদ্ধ কমিশনে রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ তৈরি হয়েছে। আমরা হয়তো অনেক প্রত্যাশা নিয়ে অংশবদ্ধ কমিশনে গিয়েছি। মৌলিক সংস্কারের যতটুকু প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। প্রত্যেকটা কথা বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করতে হবে।’