অবশেষে বন্ধ হচ্ছে মালয়েশিয়া প্রবাসীদের ই-পাসপোর্ট এবং এনআইডি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এক্সপাট সার্ভিসেস কুয়ালালামপুর (ইএসকেএল) এর সকল কার্যক্রম। আওয়ামী লীগ সরকারের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি পাওয়া ইএসকেএল মালয়েশিয়ায় প্রবাসীদের পাসপোর্ট সেবা প্রদানে কোনরকম নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে দরপত্র ছাড়াই ট্রাভেল পাস, ই-পাসপোর্ট এবং এনআইডির মতো স্পর্শকাতর কাজের দায়িত্ব পায়।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে তড়িঘড়ি করে ভিডিও কলের মাধ্যমে কোম্পানিটির উদ্বোধন করেন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন। অথচ, ট্রাভেল পাস, ই-পাসপোর্ট এবং এনআইডি সংক্রান্ত সেবাদানের পূর্ব কোন অভিজ্ঞতাই ছিল না কোম্পানিটির। প্রবাসীদের নির্বিঘ্নে সেবা দেয়ার কথা থাকলেও রেমিটেন্স যোদ্ধারা সেবা নিতে গিয়ে মারধরসহ নানা হয়রানির শিকার হয়েছেন।
“গুডবাই দালাল ভাই” স্লোগানকে সামনে রেখে যাত্রা শুরু করা ইএসকেএল নিজেরাই গড়ে তোলেন বিশাল এক দালালচক্র। সেবাপ্রত্যাশীদের এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে সেবা নেয়ার আহবান জানালেও ১৫০ রিঙ্গিত ঘুষ দিলে কোনরকম এপয়েন্টমেন্ট ছাড়াই দালালরা পিছনের লিফট দিয়ে ভিতরে নিয়ে যান। আর এই দালালদের গডফাদার হলেন প্রতিষ্ঠানটির ব্রান্ডিং এন্ড মার্কেটিং ডাইরেক্টর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার পেয়ে গর্ব করা অভিনেতা আরমান পারভেজ মুরাদ। এমনকি ১০ রিঙ্গিতের মোবাইল সিম ৩০ রিঙ্গিতে বিক্রি করেন সেবাপ্রত্যাশী প্রবাসিদের কাছে।
এছাড়া গণমাধ্যমে একেরপর এক আসতে থাকে প্রতিষ্ঠানটির নানা অনিয়মের খবর। এসব অনিয়ম ঢাকতে কতিপয় কিছু মিডিয়াকে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে তাদেরকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ইএসকেএল। তবে শেষ রক্ষা হয়নি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রবাসীদের কথা বিবেচনা করে প্রতিষ্ঠানটির সাথে চুক্তির মেয়াদ বাড়ায়নি।
এদিকে এক বছরের চুক্তি পাওয়া ইএসকেএল এর মেয়াদ শেষ হয়েছে চলতি বছরের ২২ সেপ্টেম্বরে। চুক্তি নবায়ন নানা জায়গায় দেন দরবার করেছেন, চেষ্টা চালিয়েছেন সবোর্চ্চ। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশিনের ডেপুটি হাইকমিশনার খোরশেদ আলম খাস্তগীর আগামীর ৫ বছরের জন্য ইএসকেএল এর চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠিও পাঠিয়েছিলেন।
অভিযোগ রয়েছে খোরশেদ আলম খাস্তগীর ইএসকেএলকে চুক্তির বাইরে এনআইডির সেবা দেয়ার কাজও পাইয়ে দেন তিনি। তাছাড়া ইএসকেএল এর কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া ডেপুটি হাইকমিশনার খোরশেদ আলম খাস্তগীর।
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে ইএসকেএল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ এর সঙ্গে জড়িত সকল ব্যবসায়িক অংশীদারদের বিরদ্ধে কোম্পানির নাম ভাঙিয়ে হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় পাচারের অভিযোগ উঠেছে। ই-পাসপোর্ট ও ভিসা সার্ভিসের আড়ালে হুন্ডি ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে ইএসকেএলের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ আছে, ইএসকেএলের নামে দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা পাচার করেছে। ইএসকেএল এর অনিয়ম নিয়ে বিগত সরকারের আমলে প্রতিবাদ করেছিলেন মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের নেতা মকবুল হোসেন মুকুল, যার ফলশ্রুতিতে তাকে নোংরা ভাষায় গালাগালি করে ইএসকেএল থেকে নজর সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেন নিক্সন চৌধুরীর ভাই নূর-ই-আলম চৌধুরী, যিনি তৎকালীন সংসদের চীফ হুইপ ছিলেন।

 
                            -20241205064738.jpg) 
                                     সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন