ইসলামী শরিয়তের প্রসিদ্ধ মত অনুযায়ী, কোরবানির মাংস তিন দিনের বেশি সংরক্ষণ করা সম্পূর্ণ জায়েজ এবং এতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।
অতীতে একটি নির্দিষ্ট সময়ে তিন দিনের বেশি মাংস রাখতে নিষেধ করা হয়েছিল, কিন্তু পরবর্তীতে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।
হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন ‘আমি তোমাদেরকে তিন দিনের বেশি কোরবানির মাংস রাখতে নিষেধ করেছিলাম। এখন তোমরা যত দিন ইচ্ছা রাখতে পারো এবং তা খেতে পারো।’ (সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ১৯৭৫)
এই হাদিস থেকে পরিষ্কার বোঝা যায় যে, কোরবানির মাংস অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত সংরক্ষণ করা বৈধ, যতক্ষণ না তা নষ্ট হয়ে যায় বা খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
প্রাথমিকভাবে যখন তিন দিনের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি এসেছিল, তখন এর একটি সামাজিক প্রেক্ষাপট ছিল।
মদিনায় তখন দুর্ভিক্ষাবস্থা চলছিল এবং মাংস দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করাকে উৎসাহিত করার জন্য এই সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল।
যখন পরিস্থিতি উন্নত হয়, তখন এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে, বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইবনু আবদিল বার (রহ.) বলেন, আলিমগণ এ ঐকমত্যে পৌঁছেছেন যে, তিন দিনের পরেও কোরবানির মাংস সংরক্ষণের অবকাশ রয়েছে।
এবং এ সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞাটি রহিত হয়ে গেছে। (আত-তামহিদ: ৩ / ২১৬)
এবং কেউ যদি কোরবানির মাংস কাউকে না দিয়ে পুরোটা সংরক্ষণ করে রাখে, তাও জায়েজ হবে।
ফিকহের কিতাবে বলা হয়েছে, পুরো মাংস জমিয়ে রাখলেও অসুবিধা নেই। ’ (বাদায়েউস সানায়ে: ৪ / ২২৪, আলমগিরি: ৫ / ৩০০)
কোরবানির মাংসের ব্যবহার: কোরবানির গোশতকে তিন ভাগে ভাগ করার একটি সুন্নাহসম্মত পদ্ধতি রয়েছে
১. এক ভাগ নিজেদের জন্য রাখা।
২. এক ভাগ আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের দেওয়া।
৩. এক ভাগ দরিদ্র ও অভাবীদের মধ্যে বিতরণ করা।
তবে এই বিভাজন বাধ্যতামূলক নয়, বরং মুস্তাহাব। কেউ যদি চান, তাহলে সম্পূর্ণ মাংস নিজেও রাখতে পারেন অথবা সম্পূর্ণটাই দান করে দিতে পারেন।