ঢাকা রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫

ইসলামে যেসব নারীকে বিয়ে করা নিষেধ

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০২৫, ১২:০৩ পিএম
১৪ নারীকে বিয়ে করতে নিষেধ করেছে ইসলাম। ছবি- সংগৃহীত

জীবনে নৈতিকতা, চারিত্রিক পবিত্রতা এবং সমাজের ভারসাম্য রক্ষায় বিয়ের গুরুত্ব অপরিসীম। ইসলামে বৈধ উপায়ে একজন নারী ও পুরুষের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপনকে উৎসাহিত করা হয়েছে, যা জেনা বা অবৈধ সম্পর্কের সম্পূর্ণ বিপরীত।

তবে, ইসলামের বিধান অনুযায়ী, সব নারীকেই বিয়ে করা বৈধ নয়। কিছু সম্পর্ক রয়েছে যেখানে বিয়ে করা হারাম বা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন সেই ১৪ শ্রেণির নারীর কথা, যাদের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া একজন পুরুষের জন্য সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ইসলামের এই বিধান শুধু পারিবারিক শৃঙ্খলা নয়, সমাজে নৈতিক ও রক্তসম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রেও এক অনন্য নির্দেশনা।

পবিত্র কোরআনে বর্ণিত নিষিদ্ধ নারীদের তালিকা

পবিত্র কোরআনের সুরা নিসার ২৩–২৫ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ ১৪ শ্রেণির নারীকে বিয়ে করা সম্পূর্ণ হারাম বা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। এগুলো হলো:

১. নিজের মা, ২. দাদি, নানি ও তাদের ওপরের সবাই, ৩. নিজের মেয়ে, ছেলের মেয়ে, মেয়ের মেয়ে ও তাদের গর্ভজাত কন্যাসন্তান, ৪. সহোদর, বৈমাত্রেয় (সৎ মায়ের মেয়ে) ও বৈপিত্রেয় (সৎ বাবার মেয়ে) বোন, ৫. বাবার সহোদর বোন এবং বাবার বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় বোন (ফুপু), ৬. যে স্ত্রীর সঙ্গে দৈহিক মিলন হয়েছে, তার পূর্ববর্তী বা পরবর্তী স্বামীর ঔরসজাত কন্যাসন্তান, স্ত্রীর আপন মা, নানি শাশুড়ি ও দাদি শাশুড়ি, ৭. মায়ের সহোদর বোন এবং মায়ের বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় বোন (খালা), ৮. ভাতিজি অর্থাৎ সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাইয়ের মেয়ে ও তাদের পরের প্রজন্মের কন্যাসন্তানরা।

৯. ভাগ্নি অর্থাৎ সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় বোনের মেয়ে ও তাদের পরের প্রজন্মের কন্যাসন্তানেরা, ১০. দুধ মেয়ে (স্ত্রীর দুধ পান করেছে এমন), সেই মেয়ের মেয়ে, দুধ ছেলের মেয়ে ও তাদের পরের প্রজন্মের কোনো কন্যাসন্তান এবং দুধ ছেলের স্ত্রী, ১১. দুধ মা এবং তার দিকের খালা, ফুপু, নানি, দাদি ও তাদের ঊর্ধ্বতন নারীরা, ১২. দুধবোন, দুধবোনের মেয়ে, দুধভাইয়ের মেয়ে এবং তাদের গর্ভজাত যেকোনো কন্যাসন্তান। অর্থাৎ দুধ সম্পর্ককে রক্ত সম্পর্কের মতোই গণ্য করতে হবে, ১৩. ছেলের স্ত্রী, ১৪. অন্যের বৈধ স্ত্রীকে বিবাহ করা হারাম।

সমাজের একটি বড় সমস্যা হলো- ক্যারিয়ার বা উচ্চশিক্ষার অজুহাতে অনেকেই বিয়ের বয়স পার করে ফেলেন। এতে দাম্পত্য জীবন শুরু করতে বিলম্ব হয় এবং নানা সামাজিক ও মানসিক জটিলতা তৈরি হয়। অনেক সময় এই বিলম্ব হতাশা, অসহনশীলতা বা অনৈতিক পথে ধাবিত হওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

ইসলাম সময়মতো ও সঠিকভাবে বিয়ের প্রতি উৎসাহিত করে। কেননা, এটি শুধু দাম্পত্য সম্পর্কই নয়—নৈতিকতা, আত্মিক প্রশান্তি ও সামাজিক ভারসাম্য বজায় রাখার গুরুত্বপূর্ণ উপায়।