ঢাকা শনিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৫

মা-বাবা বা স্ত্রীর নামে কসম করা যাবে কি?

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৫, ০৭:৪৭ পিএম
ছবি- সংগৃহীত

দৈনন্দিন জীবনে মানুষ প্রায়শই নিজেদের কথার বিশ্বাসযোগ্যতা প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন নামে কসম করে থাকে। এর মধ্যে মা-বাবা, স্ত্রী বা সন্তানের নামে কসম করা বেশ প্রচলিত। কিন্তু প্রশ্ন হলো, ইসলামে এই ধরনের কসম করা কতটা জায়েজ? 

ইসলামিক শরিয়ত এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে কসম করা হারাম এবং তা ছোট শিরকের অন্তর্ভুক্ত।

এ বিষয়ে প্রখ্যাত ইসলামি স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘অনেকে মা-বাবা কিংবা অন্য কারও নামে কসম কাটেন। আবার কোনো কোনো রাজনৈতিক দল দেশের মাটির কসম দেয়। এটা জায়েজ নয়। কসম হবে শুধু আল্লাহর নামে।’

তিনি জানান, নবীজি (সা.) বলেছেন, কেউ যদি কসম করতে চায় তাহলে সে আল্লাহর নামে কসম করবে, অন্যথায় চুপ থাকবে।

কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তুমি যদি সৎ থাক, আল্লাহ তোমাদের জন্য একটি পথ খুলে দেবেন এবং তোমাদের অবস্থা ভালো করে দেবেন।” (সুরা আত-তাহরিম : ২)।

অন্য আরেকটি আয়াতে তিনি বলেন, ‘তোমরা সত্য কথা বল, আল্লাহ তোমাদের জন্য একদম সৎ পথ নির্দেশ করবেন।’ (সুরা আহজাব : ৭৫)।

এই আয়াতগুলো প্রমাণ করে, সততা নিজেই বিশ্বাসের ভিত্তি তৈরি করে, কসমের প্রয়োজন নেই।

হাদিস শরিফেও আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর নামে কসম করার ব্যাপারে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার আল্লাহর রাসুল (সা.) ওমর ইবনুল খাত্তাবকে (রা.) তার পিতার নামে কসম করতে দেখে সতর্ক করে বলেন, “সাবধান! আল্লাহ তোমাদের তোমাদের বাপ-দাদার নামে কসম করতে নিষেধ করেছেন। কেউ কসম করতে চাইলে সে যেন আল্লাহর নামে কসম করে, নইলে যেন চুপ থাকে।” (বোখারি : ৬১০৮)।

অন্য একটি হাদিসে এসেছে, “যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর নামে কসম করল, সে শিরক করল।” (আবু দাউদ : ৩২৫১)।

ধর্মীয় ব্যক্তিদের মতে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো কিছুর নামে করা কসম ইসলামে কসম হিসেবে গণ্য হয় না। তাই তা রক্ষা করার বাধ্যবাধকতা থাকে না এবং ভঙ্গ করলে কোনো কাফফারাও দিতে হয় না। তবে যেহেতু এই ধরনের কসম একটি হারাম কাজ, তাই কেউ যদি না জেনে তা করে ফেলেন, তাকে অবশ্যই তওবা করতে হবে। আর যদি কেউ আল্লাহর নামে কসম করে তা ভঙ্গ করে, তবে তাকে এর কাফফারা দিতে হয়। কসমের কাফফারা হলো ১০ জন দরিদ্রকে খাবার খাওয়ানো বা কাপড় দেওয়া, অথবা তিন দিন রোজা রাখা।

এই বিধানগুলো স্পষ্ট করে যে, ইসলামে কসম শুধুমাত্র আল্লাহর নামেই করতে হবে। অন্যথায়, এটি একটি গুরুতর পাপ হিসেবে গণ্য হয়।