-কানাডা, রোমানিয়া ও রাশিয়ার প্রতি মণ গম ৪০ টাকা বেশিতে বিক্রি
-প্রতি মণ পাম্প অয়েলের দাম ৫৫০০ হলেও ৫৭৮০ টাকায় বিক্রি
-বাজার নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি ঘাটতিতে মুনাফালোভী সিন্ডিকেট তৎপর
আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম কমলেও দেশে বাড়তে শুরু করেছে। সিন্ডিকেটের কবলে পড়েছে গমের বাজার। গমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডাল ও তেলের দাম। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাজারে এসব পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করছে বিশেষ একটি ব্যবসায়ী গ্রুপ, যার কবলে পড়ে বাড়ছে এসব পণ্যের দাম। ফলে প্রভাব পড়তে পারে বাজারের অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামে।
বাজারে রাশিয়া, রোমানিয়া ও কানাডার গম পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। বাজারে চাহিদার সঙ্গে জোগানের সমন্বয় রেখে দাম ঠিক থাকলেও হঠাৎ বেড়েছে। প্রতি মণ গমে এক দিনের ব্যবধানে বেড়েছে ৪০ টাকা। তার সঙ্গে বেড়েছে ডাল ও তেলের দাম। ঢাকার বাজারের সঙ্গে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের বাজারেও গতকাল বুধবার একই চিত্র দেখা গেছে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বাজার নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির ঘাটতির কারণে একটি সিন্ডিকেট তৎপর হয়ে উঠেছে। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে বিভিন্নভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে মুনাফা লুটতে চায়।
বাজার নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি সম্পর্কে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের শীর্ষ এক কর্মকর্তা রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমাদের জনবল অনেক কম। আর আমাদের দেশের বাজার সমুদ্রের চেয়েও বড় জায়গা। এখানে সুবিধাভোগী হাজার পদের মানুষ রয়েছে। দেশের বাজার নিয়ন্ত্রণ মানে সমুদ্রের ভেতরে বসে গর্জন করা। গুটি কয়েক জনবল দিয়ে ইচ্ছা থাকলেও তা আমরা পারি না।’
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজার ঘুরে আমাদের চট্টগ্রাম প্রতিনিধি জানিয়েছেন, কানাডার গম বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ (৩৭.৩২৯ গ্রাম) ১ হাজার ৪৮০ থেকে ১ হাজার ৫২০ টাকায়। রাশিয়ার গম ১ হাজার ২৭০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা এবং রোমানিয়ার গম ১ হাজার ২৯০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে গমের সরবরাহ ঠিক থাকলেও বিকেলে প্রতি মণে ৪০ টাকা করে বাড়ে। একই সঙ্গে বেড়েছে পাম্প অয়েল ও ডালের দাম।
গত দুই দিন আগে ও মণপ্রতি পাম্প অয়েলের দাম ছিল ৫ হাজার ৫০০ টাকা। গতকাল মণপ্রতি ৫ হাজার ৭৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। তবে দাম বাড়ার কারণে বাজারে পাম্প অয়েলের বিক্রি তেমন নেই বললেই চলে।
জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জের আলম ট্রেডিংয়ের মালিক মো. হান্নান দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে জানান, বাজারে পর্যাপ্ত গম রয়েছে। চাহিদার সঙ্গে জোগানের সামঞ্জস্য থাকায় আপাতত গমের দাম বাড়ার তেমন সম্ভাবনা নাই। তবে বিকেল থেকে একটি সিন্ডিকেট বাড়িয়ে দিচ্ছে বিভিন্ন পণ্যের দাম।

আরেক ব্যবসায়ী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম কমেছে, কিন্তু দেশে বাড়ছে। চাল, চিনি, ডাল ও তেলের দাম বাড়লে প্রভাব পড়বে অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামে। এতে খুচরা ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। বিশেষ একটি গোষ্ঠী মুনাফা লুট করলেও সরকার এখানে বিশেষ দৃষ্টি দিচ্ছে না।
অন্যদিকে, ঢাকার কারওয়ান বাজারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, বিশেষ একটি গ্রুপ বাজার সরগরম করতে কলকাঠি নাড়ছে। তারা সিন্ডিকেট করে মুনাফা লুটতে চায়। এতে সমস্যায় পড়ছে নিম্ন আয়ের মানুষ। কারণ মূল্যবৃদ্ধির এই ভার তাদের বইতে হবে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুসারে, ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে প্রতি টন গমে বুকিং রেট ছিল ৪২২ ডলার। ওই বছরের ডিসেম্বরে প্রতি টন গমে বুকিং রেট ছিল ৩৮৬ ডলার। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন গম বিক্রি হয় ৩৪৫ ডলারে। ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রতি টন গমে বুকিং রেট পড়ে ৩৯৪ ডলার।
এরপর ২০২৩ সালের মার্চে প্রতি টন বিক্রি হয় ৩৬৯ ডলারে। ওই বছরের এপ্রিলে প্রতি টন গমে বুকিং রেট ছিল ৩৭৮ ডলারে। এদিকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রতি টন গম কিনতে আমদানিকারকের খরচ পড়ে ২৮৩ ডলার। ফেব্রুয়ারিতে কমে ২৭৮ ডলার, মার্চে ২৭৪ ডলার এবং এপ্রিল মাসে প্রতি টন গমে বুকিং রেট পড়ে ২৭২ ডলার।
বিশ্ববাজারের চিত্রে গমের দাম কমতির দিকে। অথচ দেশীয় বাজারে তার কোনো প্রভাব নেই। প্রতিনিয়ত বাড়ছে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম।

 
                            -20241003043455.jpg) 
                                     সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন