বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২৪, ১২:২৫ এএম

মহাসড়কে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২৪, ১২:২৫ এএম

মহাসড়কে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ফের শ্রমিক অসন্তোষ গাজীপুর শিল্পাঞ্চলে। বকেয়া বেতনের দাবিতে নগরীর বাসন এলাকায় টি অ্যান্ড জেড অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন। গতকাল শনিবার সকাল থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইলের দিকে এবং ঢাকার দিকে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে কর্মস্থল ও গন্তব্যে পৌঁছাতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। সড়ক অবরোধ থাকার বিড়ম্বনায় পড়ে শত শত কর্মজীবী মানুষকে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। শ্রমিকদের বোঝানোর চেষ্টা করে বাসন থানা ও শিল্পাঞ্চল পুলিশ। তবে শ্রমিকরা বেতন-বোনাসের দাবি থেকে সরে না এসে অবরোধ চালু রাখার ঘোষণা দেন।

আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, গত তিন মাসের বেতন ও বোনাসের দাবিতে তারা এ বিক্ষোভ করেন। ঘরে খাবার নেই, ঘর ভাড়া দিতে পারছেন না বলেও দাবি তাদের। এ সময় দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে হুঁশিয়ারিও দেন তারা। এর আগে গত মঙ্গলবার একই দাবিতে প্রায় এক ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছিলেন শ্রমিকরা।

এদিকে শিল্পাঞ্চলে কারখানাগুলোর নিরাপত্তা ও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কাজ করছে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, বিজিবি ও শিল্প পুলিশের একাধিক টিম। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এ খবর লেখা পর্যন্ত শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। 

গাজীপুর শিল্পপুলিশ ও শ্রমিকেরা জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মালেকের বাড়ি এলাকায় টি অ্যান্ড জেড অ্যাপারেলস লিমিটেড নামের একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বেতনভাতা না দিয়ে কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ রেখেছে। ওই গ্রুপের ছয়টি কারখানার সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের বেতন বকেয়া আছে। এ নিয়ে শ্রমিকেরা দীর্ঘদিন ধরেই বেতন পরিশোধের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ তা পরিশোধ না করে বিভিন্নভাবে তালবাহানা শুরু করেছে। এ অবস্থায় শনিবার সকালে শ্রমিকেরা কারখানার সামনে জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা মালেকের বাড়ি কলম্বিয়া মোড় এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। কিন্তু সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এ খবর লেখা পর্যন্ত শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। 
আন্দোলনরত শ্রমিকেরা বলেন, গত এপ্রিল মাস থেকে কারখানা বন্ধ ছিল। সেপ্টেম্বরে কারখানা খুললেও দুই মাসের বেতন না দিয়ে কর্তৃপক্ষ তালবাহানা করছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বারবার বেতন পরিশোধের তারিখ দেওয়া হলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বেতন দিচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে সড়ক অবরোধ করতে হয়েছে।

গাজীপুরের শিল্পপুলিশের পরিদর্শক বায়জিদ মিয়া জানান, সকাল ৮টা থেকে ৬টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১২০০ শ্রমিক জড়ো হয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের রাস্তা থেকে উঠিয়ে দিতে চাইলেও তারা সড়কে বসে পড়ে।

শ্রমিকরা জানান, গত ২৩ অক্টোবর বকেয়া বেতন পরিশোধ করার কথা থাকলেও পরিশোধ করেনি কারখানা কর্তৃপক্ষ। পরে ২৪ অক্টোবর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যস্থতায় মালিক পক্ষ ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়। সেখানে সেপ্টেম্বরের বেতন ৩ নভেম্বর ও অক্টোবরের বেতন ২০ নভেম্বর পরিশোধের আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত বেতন না দেওয়ায় শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছেন।

কারখানার শ্রমিক আবুল কালাম বলেন, মালিকপক্ষ আমাদের পাওয়া বেতন না দিয়েই কারখানা বন্ধ রেখেছে। আমরা বেশ কিছুদিন ধরেই বকেয়া পরিশোধের দাবিতে আন্দোলন করছি। আমাদের দাবি মেনে নিলে মহাসড়ক ছেড়ে দেব। 
অপর এক শ্রমিক বলেন, তিন মাস ধরে আমরা বেতন পাচ্ছি না। পরিবার নিয়ে সংকটে আছি। কারখানা চালু রাখলে ঠিকমতো চালাবে আর চালু না রাখতে চাইলে আমাদের পাওনা দিয়ে বন্ধ করে দিবে। কিন্তু শ্রমিকদের বেতন আটকে কারখানা বন্ধ রাখা কোন আইনে পড়ে বলে প্রশ্ন রাখেন এই শ্রমিক।

স্থানীয়রা বলেন, গত প্রায় এক মাস ধরে এই কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন সময় বিক্ষোভ করছেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বেতন-ভাতার বিষয়টি সুরাহা করছে না। ফলে কয়েক দিন পরপর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকরা। এ কারণে এই মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী এবং পরিবহন চালকদের প্রায় সময় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

গাজীপুর শিল্পপুলিশের টঙ্গী জোনের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. মোশারফ হোসেন রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, সন্ধ্যা হয়ে গেছে এখনো সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকরা। ফলে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, মালিক পক্ষের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েকবার আশ্বাস দিয়েছেন বকেয়া বেতন দেওয়ার কিন্তু তারা বেতন না দিয়ে কারখানা বন্ধ রেখেছেন।

গাজীপুর শিল্পপুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খলিলুর রহমান বলেন, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে শিল্পপুলিশ, মহানগর পুলিশ, সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে রয়েছে। কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। 

তিনি আরও বলেন, শ্রমিক আন্দোলনসহ নানা কারণে মহানগরী ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় ১০টি কারখানা বন্ধ রয়েছে।

আরবি/জেডআর

Link copied!