বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


তরিক শিবলী

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২৪, ১২:৩৫ এএম

শতকোটির মালিক শাহজাহান

তরিক শিবলী

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২৪, ১২:৩৫ এএম

শতকোটির মালিক শাহজাহান

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

২০১০ সালে জামালপুরের সরিষাবাড়ী থেকে বাসে চড়ে ঢাকায় আসেন মোহাম্মদ শাহজাহান ওরফে সিনথিয়া শাহজাহান। গন্তব্য ঢাকা হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর কাস্টমস। তার পরিচিত এক কাস্টমস কর্মকর্তার মাধ্যমে বিমানবন্দর কাস্টমসের ট্রলিম্যান হিসেবে কাজ শুরু করেন। পেয়ে যান আলাদীনের চেরাগ। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এই শাহজাহানকে। কাস্টমসের যেকোনো কাজ তার কাছে তুচ্ছ বিষয়। কতিপয় কর্মকর্তার প্রশ্রয়ে অনিয়ম আর দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ টাকা উপার্জন করা শুরু করেন। মাত্র ১৪ বছরে বনে গেছেন অন্তত ১০০ কোটি টাকার মালিক। ঢাকায় ও গ্রামের বাড়িতে রয়েছে কয়েকটি বিলাসবহুল বাড়ি ও গাড়ি।

ইতিমধ্যেই এই ব্যক্তির অবৈধ সম্পদের বিষয়ে অভিযোগ আমলে নিয়েছে দুদক। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হত্যা ও হামলার ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানাসহ বিভিন্ন থানায় পাঁচটি মামলার আসামি তালিকায় শাহজাহানের নাম রয়েছে। এমটাই জানিয়েছেন তার সহকর্র্র্মীরা।

হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর এলাকার বাসিন্দা মনির হোসেন বলেন, ঢাকায় এসে প্রথমে ইউসুফ আলীর মেসে  ওঠেন শাহজাহান ওরফে সিনথিয়া শাহজাহান।

সেখানেই থাকা-খাওয়া। মাঝে মাঝে না খেয়েও থাকতে হতো। দুই বছর আগে শাহজাহান সেই মেসটি কিনে নেন। ইসমাইল নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে মেসটির ক্রয়-বিক্রয় হয়। বর্তমানে শাহজাহান ঢাকা বিমানবন্দর কাস্টমস এলাকায় সিনথিয়া ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি অফিস পরিচালনা করেন। এখান থেকেই তার সব ব্যবসা পরিচালিত হয়।

জানা যায়, বিগত বছরগুলোতে আওয়ামী রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে গভীর সখ্য গড়ে তুলেছিলেন শাহজাহান। নিজেকেও পরিচয় দেন আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে। আওয়ামী লীগের রাজনীতির প্রভাব বিস্তার করে ২০২০ সালে ঢাকা কাস্টমস অ্যাসোশিয়সনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন এই শাহজাহান। কিন্তু গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর খোলস পাল্টান তিনি। বর্তমানে নিজেকে বিএনপির নেতা হিসেবে দাবি করেন।

সহকর্মীসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালে শাহজালাল বিমানবন্দরে ট্রলিম্যান হিসেবে কাজ শুরু করেন। তখন মাত্র আট হাজার টাকা বেতনে চাকরি করেন শাহজাহান। কামালসহ একাধিক ট্রলিম্যান প্রশ্ন তোলেন, আট হাজার টাকা বেতনের চাকরি করে মাত্র কয়েক বছরে শাহজাহান কীভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে গেলেন এ প্রশ্ন সবার। সৎপথে এত টাকার মালিক হওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সিনথিয়া শাহজাহানের রয়েছে রাজধানীর দক্ষিণখানে সিনথিয়া অ্যান্ড সিলভিয়া কটেজ নামে দশতলা ভবন।

আশকোনায় রয়েছে অন্তত ছয় কোটি টাকা মূল্যের বিশাল একটি ফ্ল্যাট। শাহজাহানের উত্তরায় এক নম্বর সেক্টরে রয়েছে নিজ বাড়ি।

আশকোনার আশিয়ান সিটিতে একাধিক প্লট রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

শাহজাহানের গ্রামের বাড়ি জামালপুর সরিষাবাড়ীতে ২০১০ সালে ভিটামাটি ছাড়া তেমন কিছু ছিল না। বর্তমানে সেখানে অবৈধ অর্থে বিশাল সম্পত্তি কিনে গড়ে তুলেছেন ডুপ্লেক্স বাড়ি।

রয়েছে এক বিঘা জমির ওপর একটি পুকুর, যেখানে শখের মাছ চাষ করেন এই সিনথিয়া শাহজাহান। নিজের শ্বশুরবাড়িতেও করেছেন সম্পদের পাহাড়। জানা যায়, তার বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ ইতিমধ্যে আমলে নিয়েছে দুদক।

সেখানে অভিযোগে বলা হয়েছে, এয়ারপোর্টের স্বর্ণ চোরাকারবারির সঙ্গেও যুক্ত রয়েছেন এই শাজাহান। অভিযোগ রয়েছে, বিমানবন্দর কাস্টমসের অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সঙ্গে যোগসাজশে নিয়মবহির্ভূত কাজ করে থাকেন এই ব্যক্তি। আছে সোনা চোরাকারবারিতে জড়িত থাকার অভিযোগও।

জানা গেছে, এ ছাড়া আশকোনায় ১৮ কাঠা জমির ওপর আরও একটি বিল্ডিংয়ের নির্মাণকাজ চলমান আছে। উত্তরা ১৮ নম্বর সেক্টরে আরেকটি বাড়ির নির্মাণকাজ চলছে। রয়েছে বিলাসবহুল কয়েকটি গাড়ি। দুদকের অভিযোগে বলা হয়, এয়ারপোর্টের নানা অপকর্ম, মানি লন্ডারিংয়ের মতো অপরাধের সাথে যুক্ত এই শাহজাহান। সর্বশেষ আশুলিয়া থানায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগের পক্ষ হয়ে ছাত্রদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডে  উত্তরা পশ্চিম থানাসহ পাঁচটি মামলার আসামি। বর্তমানে শাহজাহান পালাতক অবস্থায় থাকলেও এয়ারপোর্টের কাস্টমসের সামনে সিনথিয়া ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামের প্রতিষ্ঠানটি সচল রয়েছে। তার ম্যানেজারের মাধ্যমেই সব কিছু পরিচালনা করা হচ্ছে।

রূপালী বাংলাদেশের এই প্রতিনিধি বক্তব্য নিতে কথা বলতে চাইলে সিনথিয়া ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজার সহযোগিতা করেননি। বরং ম্যানেজ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।

আরবি/জেডআর

Link copied!