বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: মার্চ ২৫, ২০২৫, ১০:৪০ এএম

বাজার চড়া গুলিস্তানের নতুন টাকার

এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: মার্চ ২৫, ২০২৫, ১০:৪০ এএম

বাজার চড়া গুলিস্তানের নতুন টাকার

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

দুয়ারে কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদ সামনে রেখে ঢাকা শহর ছাড়ছেন লাখো-লাখো মানুষ। ঈদ বাজারের জামা-কাপড়ের সঙ্গে সালামির জন্য কিনছেন নতুন টাকা। তবে এবারের ঈদে নতুন নোট বাজারে না আসায়, গেল কয়েক দিন ধরেই মতিঝিল ও গুলিস্তানের নতুন টাকার বাজার চড়া। ২, ৫, ১০, ২০ টাকাসহ সব ধরনের নতুন নোট কিনলে আগের চেয়ে বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। এবারের ঈদে নতুন নোট বাজারে না ছাড়ার সিদ্ধান্তে এমন প্রভাব পড়েছে। 

সরেজমিনে, গুলিস্তানের নতুন টাকার অস্থায়ী দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, প্রতি বান্ডিলে গতবারের ঈদের চেয়ে ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত  বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। এবারের ঈদে ৫, ১০, ২০ ও ৫০ টাকার নতুন নোটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। ঈদ সামনে রেখে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিবছরই নতুন নোট বাজারে ছাড়ে। এ সময় নতুন পোশাকের পাশাপাশি সালামির জন্য নতুন টাকাও সংগ্রহ করেন অনেকে। তবে, আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জনসাধারণের মধ্যে নতুন নোট বিনিময় স্থগিত করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, টাকায় শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকায় বাধে আপত্তি।

নতুন টাকা কিনতে আসা মো. আলিম উদ্দিন কথা বলেন রূপালী বাংলাদেশের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতিটা ঈদকে কেন্দ্র করে নতুন নোটের চাহিদা বাড়ে। বাড়ির ছেলে-মেয়েসহ সকলকে সালামির জন্য নতুন টাকা সংগ্রহ করি ব্যাংক এবং গুলিস্থান থেকে। তবে এবার ব্যাংকে নতুন টাকা না পাওয়াতে চাপটা একটু বেশিই দেখছি। গুলিস্থান ও মতিঝিল এলাকায়। 

গুলিস্তানসহ বিভিন্নস্থানে নতুন নোট ও ছেঁড়া টাকার বেচাকেনার অস্থায়ী দোকান আছে। মূলত ফুটপাতেই এ ব্যবসা বেশি চলে। ঈদকে ঘিরে চাহিদা বাড়ে নতুন টাকার ব্যবসায়িদের দাবি দুই ঈদ ঘিরেই পুরো বছরের ব্যবসাটা করেন তারা।  

গতকাল রোববার সরেজমিনে দেখাযায়, গুলিস্তান ও তার আশেপাসের এলাকাজুড়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা নতুন নোটের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। একের পর এক ক্রেতাও আসছেন। তবে চড়া দাম শুনে দরদাম না করেই অনেকে চলে যাচ্ছেন। ক্রেতাদের দাবি, গত বছরের তুলনায় নতুন নোটের দাম প্রতি বান্ডিলে ১০০ থেকে ২০০ থেকে টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। 

তারসাথে, এবারের ঈদে নতুন নোট বাজারে আসবে নাÍএ খবর ছড়িয়ে পড়তেই এই মৌসুমি ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। নতুন টাকার ব্যবসায়ী আব্দুর মুকিত বলেন, আমরা মূলত ছেঁড়া ও পুরোনো টাকার ব্যবসায়ী। ঈদকে ঘিরে বছরে দু বার আমাদের নুতন টাকার ব্যবসাটা জমে, এবার বাজারে নতুন টাকার বেশ সংকট থাকায় আমাদের পেতে কষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে কারণে কিছুটা বাড়তি নতুন টাকার দাম। 

খোজ নিয়ে জানা যায়,  ২ টাকার ১০ বান্ডিল (২ হাজার টাকা) নতুন নোটের দাম চাওয়া হচ্ছে ৩ হাজার ৫০০ টাকা। ৫ টাকার এক বান্ডিল (৫০০ টাকার মূল্যমান) বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা বাড়তি দামে। ১০ টাকার এক বান্ডিল নতুন নোট বিক্রির জন্য ১ হাজার ৪৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়। এক বান্ডিলে ১০০টি নোট থাকে এবং এর মূল্যমান ১ হাজার টাকা। 

দর-কষাকষি করে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমে একেকটি বান্ডিল ক্রেতারা কিনছেন। গত বছর পবিত্র রোজার সময় এমন এক বান্ডিল নতুন নোট বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকায়। অর্থাৎ নতুন নোটের বান্ডিলপ্রতি ক্রেতাদের বাড়তি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা খরচ করতে হচ্ছে, যা গত বছর পবিত্র রোজার সময় ছিল ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। একইভাবে ২০ টাকার এক বান্ডিলেও গুনতে হচ্ছে বাড়তি ৪৫০ টাকার কমবেশি।

গুলিস্তানে বেসরকারি চাকরিজীবী জব্বার আমিনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, প্রায় এক বছর পর পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামে যাবেন। তাই বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যালয়ে নতুন টাকা সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন। সেখানে না পেয়ে তিনি গুলিস্থান বসা ভ্রাম্যমাণ নতুন নোটের দোকানে আসেন। কেনেন ১০ ও ২০ টাকার নতুন নোটের বান্ডিল। 

ঈদের দিন বাচ্চাদের সালামি দেওয়ার জন্য নতুন নোট কিনেছেন তিনি। প্রায় প্রতিবছরই নতুন নোট সংগ্রহ করেন উল্লেখ করে বলেন, এবার আগের বছরের চেয়ে দাম অনেক বেশি। তবে, অনেক দিন পর গ্রামের বাড়িতে ফেরা ছোট বাচ্চাদের নতুন টাকা দেবার এবং তাদের নতুন টাকা পাবার পর আনন্দ থেকে বঞ্চিত করতে চায় না । 

গুলিস্তান স্পোর্টস মার্কেটের সামনে ১০ বছর ধরে নতুন ও পুরোনো নোটের ব্যবসা করেন আবুল ফজল। তিনি বলেন, বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মচারী বা কর্মকর্তাদের কাছ থেকে নতুন নোট কেনেন তারা। এবার নতুন নোট দিতে হিমশিম খাচ্ছেন সেকল মাধ্যম। সাথে, নতুন নোট বাজারে আসবে নাÍএমন খবরে কিনতেও হচ্ছে বাড়তি দামে। তবে, এই বাড়তি দামের চাপ পড়ছে ক্রেতাদের ওপর বলে জানান তিনি।  ব্যবসায়ীরা আরো জানান, এখন পেশাজীবী ও ব্যবসায়ী শ্রেণির লোকেরা নতুন নোট বেশি কেনেন। তবে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত গ্রামে ফেরা ও শ্রমজীবী ক্রেতার সংখ্যা আরো বাড়বে।

উল্লেখ্য, এবার বিভিন্ন ব্যাংককে চিঠি দিয়ে নতুন নোট বিনিময় স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক  জানায়, আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জনসাধারণের মধ্যে নতুন নোট বিনিময় কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য পরামর্শ দেওয়া হলো। পাশাপাশি ব্যাংকের শাখায় যে নতুন নোট গচ্ছিত রয়েছে, তা বিনিময় না করে সংশ্লিষ্ট শাখায় সংরক্ষণ করার জন্য বলা হলো। চিঠিতে পুনঃপ্রচলনযোগ্য নোট দ্বারা সব নগদ লেনদেন কার্যক্রম সম্পাদনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে নতুন নোট পাওয়া যাবে ১৯ মার্চ থেকে। এবার ৫, ২০ ও ৫০ টাকার নতুন নোট দেওয়া হবে। নতুন নোট বিনিময় হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ ব্যাংক ও কয়েকটি ব্যাংকের শাখার মাধ্যমে। ২৫ মার্চ পর্যন্ত জনসাধারণ ও গ্রাহকদের মধ্যে নতুন নোট বিনিময়ের পরিকল্পনা ছিল। এরই মধ্যে নতুন নোট বিতরণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!