দুবাইয়ে ভারতের কোচি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (কুসাট) সাবেক শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠনের আয়োজিত অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার শহীদ আফ্রিদি এবং উমর গুলের উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে আয়োজক কমিটি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর ভারতের বিভিন্ন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়, যার জেরে আয়োজকেরা প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হয়েছেন।
গত ২৫ মে দুবাইয়ের পাকিস্তান অ্যাসোসিয়েশন দুবাই (পিএডি) নামের কমিউনিটি সেন্টারে কোচি ইউনিভার্সিটি বিটেক অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন বা সিইউবিএএ-ইউএই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ইন্টার-কলেজিয়েট ড্যান্স ইভেন্টে আফ্রিদি ও গুলকে দেখা যায়। এ সময় উপস্থিত দর্শকদের আফ্রিদির নামে ‘বুম বুম’ উল্লাস করতেও শোনা যায়।
এদিকে, এই বিতর্কের মূল কারণ হলো, গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে আফ্রিদির কিছু মন্তব্য ভারতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছিল। সে সময় যুদ্ধাবস্থার মধ্যে ভারতে যেসব পাকিস্তানি ক্রীড়াবিদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হ্যান্ডল বন্ধ করে দেওয়া হয়, আফ্রিদিও তাদের একজন ছিলেন।
এমন প্রেক্ষাপটে আফ্রিদিকে ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের অনুষ্ঠানে দেখতে পেয়ে ক্ষুব্ধ হন ভারতের অনেকে।
ভারতের কেরালা রাজ্যের সাবেক বিজেপি সভাপতি কে সুরেন্দ্রন অভিযোগ করেন, আফ্রিদির উপস্থিতির মাধ্যমে আয়োজকেরা পেহেলগামের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের অসম্মান করেছেন।
অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি) সিইউবিএএ–ইউএই কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট বাতিলের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দায়ের করেছে।
এবিভিপি কেরালা রাজ্যের সেক্রেটারি ইইউ ঈশ্বরাপ্রসাদ বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের কার্যক্রম সন্দেহজনক, যেখানে ভারতবিদ্বেষীরা উপস্থিত ছিলেন। এটি পেহেলগামে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এবং বৈশ্বিক পর্যায়ে ভারতের জন্য অসম্মান।’
এ বিষয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজকেরা একটি বিবৃতি দিয়েছেন। তাদের দাবি, ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের আগেই অনুষ্ঠানের ভেন্যু চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ক্রিকেটাররা সেখানে অন্য একটা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন। আমাদের অনুষ্ঠান যখন শেষের দিকে, তখন হঠাৎই সেখানে উপস্থিত হন তারা।
আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আয়োজক কমিটির কেউ তাদের আমন্ত্রণ জানাননি। অনুষ্ঠানের সূচিতে ওই ব্যক্তিদের নামও ছিল না।’
সংগঠনটি আরও জানায়, ‘আমাদের কাজের কারণে কেউ আহত বা অপমানবোধ করে থাকলে তার জন্য আমরা গভীরভাবে অনুতপ্ত। এটি কখনোই আমাদের উদ্দেশ্য ছিল না। এতে যারা আহত হয়েছেন, তাদের কাছে আমরা আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।’
অপরদিকে, কোচি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (কুসাট) কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আয়োজক সংগঠনটি তাদের অনুমোদিত নয় এবং অনুষ্ঠানের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কিছুই জানতো না।