ঢাকা শুক্রবার, ২৭ জুন, ২০২৫

শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং দাপটে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২৫, ০৩:১৯ এএম
বল হাতে ধারহীন বোলিং সব মিলিয়ে হতাশাজনক দিন শেষ করলো টাইগাররা। ছবি- সংগৃহীত

কলম্বো টেস্টের দ্বিতীয় দিনে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং দাপটে রীতিমতো কোণঠাসা হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে বড় জুটি গড়তে ব্যর্থতা এবং বল হাতে ধারহীন বোলিং সব মিলিয়ে হতাশাজনক দিন শেষ করলো টাইগাররা।

বাংলাদেশের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স অকপটে স্বীকার করেছেন, এটা ছিল সত্যিই কঠিন দিন।

বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতা

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটারই ফিফটির দেখা পাননি। সর্বোচ্চ রান এসেছে উদ্বোধনী ব্যাটার সাদমান ইসলামের ব্যাট থেকে মাত্র ৪৬ রান। দলের সর্বোচ্চ জুটি ছিল মাত্র ৬৭ রানের।

যা মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসের মধ্যে পঞ্চম উইকেটে গড়ে উঠেছিল। গল টেস্টে ব্যাটিং নিয়ে যেখানে কিছুটা আত্মবিশ্বাস ফিরেছিল, সেখানে কলম্বোতে যেন সব এলোমেলো হয়ে গেছে।

শ্রীলঙ্কার অপ্রতিরোধ্য ব্যাটিং

এর বিপরীতে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং ছিল নিখুঁত ছন্দে। উদ্বোধনী জুটিতেই তারা ৮৮ রান তোলে। এরপর পাথুম নিশাঙ্কা এবং দিনেশ চান্দিমালের ব্যাটে গড়ে ওঠে ১৯৪ রানের বিশাল দ্বিতীয় উইকেট জুটি। 

দিন শেষে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ২৯০ রান তুলে নিয়েছে স্বাগতিকরা, ফলে বাংলাদেশ এখন ৪৩ রানে পিছিয়ে। নিশাঙ্কা ১৪৬ রানে অপরাজিত আছেন।

কোচের হতাশা ও আত্মসমালোচনা

সন্ধ্যার সংবাদ সম্মেলনে সিমন্স বলেন, গতকাল আমরা বড় কোনো জুটি গড়তে পারিনি। তাই আজ সকালে হাতে মাত্র দু-তিন উইকেট নিয়ে খেলতে নেমেছি। টেস্ট ম্যাচে ভালো জায়গায় যেতে হলে অন্তত দু-তিন ব্যাটারকে লম্বা ইনিংস খেলতে হয়। 

এটা আমাদের মনে রাখতে হবে। নিশাঙ্কা যেভাবে ব্যাট করেছে, সেটি পরের ইনিংসের জন্য আমাদের শিক্ষার বিষয় হওয়া উচিত।

তবে ব্যর্থতা শুধু ব্যাটিংয়েই সীমাবদ্ধ ছিল না, বোলারদের কাছ থেকেও কাঙ্ক্ষিত সাড়া আসেনি। একপ্রান্তে তাইজুল ইসলাম চাপ তৈরি করলেও অন্য প্রান্তে কেউ সেই চাপ ধরে রাখতে পারেননি।

বিশেষ করে নতুন বলের বোলাররা শুরুতেই শ্রীলঙ্কার ওপেনারদের সহজে খেলতে দিয়েছেন।

সিমন্স বোলারদের পারফরম্যান্স নিয়ে বলেন, বোলারদের জন্য দিনটা ছিল কঠিন। উইকেট অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছিল, ব্যাট করার পক্ষে অনুকূল। 

আমরা উইকেট পেতে অনেকটা সংগ্রাম করেছি। এটা টেস্ট ক্রিকেটে হয়, তবে আমাদের আরও সুশৃঙ্খল বোলিং দরকার ছিল।

প্রথম দিনের তুলনায় দ্বিতীয় দিন উইকেট ব্যাটিংয়ের পক্ষে সহজ ছিল—এটি মেনেই নিয়েছেন কোচ। তার ভাষায়, প্রথম দিন উইকেট ছিল স্টিকি, কিছু বল থেমে আসছিল। 

আজকের দিনে সে সমস্যা ছিল না। বল ভালোভাবে ব্যাটে এসেছে, টার্নও ছিল না। শ্রীলঙ্কার ব্যাটাররা তা ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছে।

তৃতীয় দিনের চ্যালেঞ্জ ও প্রত্যাশা

এখন প্রশ্ন, তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবে? বাংলাদেশের বোলারদের হাতে এখনো নতুন বল রয়েছে। প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের চাপে ফেলার শেষ সুযোগ এটিই।

সিমন্স আশাবাদী হলেও সতর্ক, কাল সকালে আমাদের শুরুটা অনেক ভালো হতে হবে। উইকেট থেকে কেমন আচরণ পাই, তা বোঝার চেষ্টা করব। তারপর চেষ্টা করব এমন জায়গায় বল করতে, যেখান থেকে উইকেট আদায় সম্ভব। 

আজকের মতো ঢিলেঢালা বোলিং হলে সেটা আর হবে না।

শ্রীলঙ্কার হাতে এখনো ৮ উইকেট আছে এবং লিড সবে শুরু হয়েছে। তৃতীয় দিনে সেই ব্যবধান কতটা বাড়ে এবং বাংলাদেশ কতটা লড়াইয়ে ফিরে আসে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।