জাতীয় ক্রিকেট দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে তার পদত্যাগপত্র জমা পড়েছে বলে বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করেছে বোর্ড। বিষয়টি নিয়ে অভ্যন্তরীণ আলোচনার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে।
দুবাই থেকে ফোনে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল গণমাধ্যমকে জানান, সালাউদ্দিনের পদত্যাগ গ্রহণ করা হবে। ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন, ‘সে (সালাউদ্দিন) আয়ারল্যান্ড সিরিজের পর দায়িত্ব ছাড়ার আগ্রহ জানিয়েছে। আমরা নিজেদের আলোচনা শেষে মন্তব্য করব।’
২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে খণ্ডকালীন সহকারী কোচ হিসেবে দায়িত্ব পান সালাউদ্দিন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শেষে তার মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত করা হয়। তবে মাত্র ছয় মাসের মাথায় তার পদত্যাগ ক্রিকেট অঙ্গনে বিস্ময় তৈরি করেছে।
ক্রিকেটসংশ্লিষ্টদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় দলের ব্যাটিং ব্যর্থতা এবং তা ঘিরে সমালোচনার চাপ এ সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলেছে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল), বিপিএলসহ বিভিন্ন বেসরকারি কাঠামোয় কাজ করার সুযোগ থাকায় আগের পরিবেশে ফেরার কথাও শোনা যাচ্ছে।
বিসিবির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সামাজিক মাধ্যমে সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি তদন্তে বোর্ড সভাপতির আগ্রহ জানার পর অভিমান থেকেই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে তার ধারণা।
তা ছাড়া ড্রেসিংরুমে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণে সালাউদ্দিনের প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। অনুশীলন পরিকল্পনা, গেম প্ল্যানসহ সিদ্ধান্তে তার মতকে গুরুত্ব দিতে হতো—এমন অভিযোগ দলের অভ্যন্তরে বিভাজনও সৃষ্টি করেছে বলে গুঞ্জন আছে।
সহকারী কোচ হিসেবে ব্যাটিং দেখভালের দায়িত্ব থাকলেও গত এক বছরে সাদা বলের ক্রিকেটে ব্যাটিং ব্যর্থতা প্রকট হয়েছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর এশিয়া কাপ টি২০তেও কাঙ্ক্ষিত রান করতে পারেননি ব্যাটাররা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ ও শ্রীলঙ্কা সফরেও ব্যাটিং লড়াই ছিল দুর্বল।
এদিকে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজ সামনে রেখে মোহাম্মদ আশরাফুলকে নতুন ব্যাটিং কোচ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে বিসিবি। এই সিদ্ধান্তেও আঘাত পেয়েছেন সালাউদ্দিন—এমন ধারণা বোর্ড কর্মকর্তাদের।
যদিও একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে সালাউদ্দিনের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।



