শুক্রবার, ০৯ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ৮, ২০২৫, ০৬:২১ পিএম

৬ ফুট ৫ ইঞ্চি দেয়ালে আটকা পড়ল আর্সেনাল

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ৮, ২০২৫, ০৬:২১ পিএম

৬ ফুট ৫ ইঞ্চি দেয়ালে আটকা পড়ল আর্সেনাল

জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা। ছবি: সংগৃহীত

পার্ক দে প্রিন্সেসে খেলা চলছিল আর্সেনাল ও পিএসজির। আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছিল রসিকতা—পোস্টের নিচে আরেক ‘জিয়ানলুইজি’! কেউ কেউ তো একেবারে নাম ছেঁটে বলেই ফেললেন, ‘আরেক গিগি’!

নাম শুনেই হয়তো অনেকে ভাবছিলেন জিয়ানলুইজি বুফনের কথা। ২০২৩ সালে অবসর নেওয়া ইতালিয়ান কিংবদন্তি ছিলেন তিন কাঠির নিচের অবিচল প্রহরী। কিন্তু কাল রাতে তাঁর বদলে সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিলেন আরেক ইতালিয়ান—জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা। 

নামটা আলাদা হলেও কাজের দিক থেকে যেন হুবহু বুফনের মতোই—অতিমানবীয় সেভ, শূন্যে লাফিয়ে আকাশ থেকে বল নামিয়ে আনা, আর প্রতিপক্ষের আক্রমণগুলো ঠেকিয়ে দলকে বাঁচানো।

আর্সেনাল যেন গতরাতে সেই মানবদেয়ালের সামনে হেরে বসল! ম্যাচের চার মিনিটেই গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লির শট ঠেকান দোন্নারুম্মা। এরপর ওডেগার্ড ও সাকার শটেও ছিল অসাধারণ সব রিফ্লেক্স, বাঁ দিকে ছুটে গিয়ে বল ঠেকানো, কিংবা ডান প্রান্ত থেকে বাঁকানো শট ঝাঁপিয়ে আটকানো—সবই ছিল ফুটবলীয় নৈপুণ্যের নমুনা।

২০২০ ইউরো ফাইনালে বুকায়ো সাকার পেনাল্টি ঠেকানো সেই দোন্নারুম্মাই এবার চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালেও বারবার আটকে দিয়েছেন আর্সেনালকে। প্রথম লেগেও লিয়ান্দ্রো ত্রোসার ও মার্তিনেল্লির শট ঠেকিয়েছিলেন তিনি।

মজার ব্যাপার হলো, এত পারফরম্যান্সের পরও ম্যাচসেরা হননি দোন্নারুম্মা। ট্রফি উঠেছে আশরাফ হাকিমির হাতে, যিনি দুর্দান্ত একটি গোল করেছেন। তবে পিএসজির খেলোয়াড়দের অনেকেই স্বীকার করেছেন—আসল ম্যাচসেরা ছিলেন দোন্নারুম্মা। ভিতিনিয়া  বলেছেন, ‘ম্যাচসেরা? অবশ্যই গিগি!’

চ্যাম্পিয়নস লিগের চলতি মৌসুমের নকআউট পর্বে এখন পর্যন্ত ২০টি সেভ করেছেন দোন্নারুম্মা। সেমিফাইনালের দুই লেগেই করেছেন ৮টি সেভ, আর গোল হজম করেছেন মাত্র একটি। অথচ এই আর্সেনালই তো রিয়াল মাদ্রিদকে দিয়েছে পাঁচ গোল!

ফিরতি লেগেও সেই একই ‘মানবদেয়াল’-এ মাথা ঠুকে মরায় (বিদায়) হতাশ আর্সেনাল কোচ মিকেল আরতেতা প্রতিপক্ষের প্রশংসা না করে পারেননি। ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘কখনো কখনো প্রতিপক্ষের প্রশংসা করতে হয়। দুই ম্যাচেই তাদের কিপার যা করেছে, সেটা তাদের জিতিয়েছে। দুই লেগ মিলিয়ে তাদের গোলকিপার সেরা খেলোয়াড়।’

ফুটবলবিশ্বে তাই কথাটা জোরে-সোরে ফিরছে—জিয়ানলুইজি বুফনের যোগ্য উত্তরসূরি পেয়ে গেছে ইতালি। আর সেই উত্তরসূরি নিজেই বলেছেন, ‘গিগি শুধু বন্ধু নন, তিনি আমার শিক্ষক, অনুপ্রেরণা।’

তবে ফুটবল বিশ্বে এমন কিছু খেলোয়াড় আছেন যারা খুব অল্প বয়সেই নিজেদের প্রতিভার ঝলক দেখিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেন। জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা তাদেরই একজন। ১৯৯৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ইতালিতে জন্ম নেওয়া এই গোলকিপার খুব দ্রুতই বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন।

দোন্নারুম্মার ফুটবল যাত্রা শুরু হয় স্থানীয় ক্লাব এএসডি ক্লাব নাপোলির যুব একাডেমিতে। সেখানে কয়েক বছর কাটানোর পর, ২০১৩ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে তিনি ইতালির অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ক্লাব এসি মিলানের যুব দলে যোগ দেন। 

তার বড় ভাই আন্তোনিও দোন্নারুম্মাও একই ক্লাবের যুব দলে গোলকিপার হিসেবে খেলতেন। ছোটবেলা থেকেই দোন্নারুম্মা মিলানের সমর্থক ছিলেন এবং তার আদর্শ ছিলেন কিংবদন্তি গোলকিপার জিয়ানলুইজি বুফন।

মিলানের যুব দলে যোগ দেওয়ার পর দোন্নারুম্মাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১৫ সালে, মাত্র ১৬ বছর ২৪২ দিন বয়সে, তিনি সিরি এ-তে এসি মিলানের হয়ে অভিষেক করেন এবং দ্বিতীয় কনিষ্ঠ গোলকিপার হিসেবে এই লিগে খেলার রেকর্ড গড়েন। 

সেই ম্যাচে তিনি অভিজ্ঞ দিয়েগো লোপেজের পরিবর্তে মাঠে নেমেছিলেন এবং নিজের দক্ষতার প্রমাণ দিয়ে খুব দ্রুতই দলের প্রথম পছন্দের গোলকিপার হিসেবে জায়গা করে নেন।

তারুণ্যেই দোন্নারুম্মা তার অসাধারণ রিফ্লেক্স, লম্বা শরীর এবং নির্ভীক মনোভাবের জন্য পরিচিতি লাভ করেন। ইতালির যুব দলগুলোতেও তিনি নিয়মিত খেলেন এবং ২০১৬ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে ইতালির জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক হওয়ার মাধ্যমে সর্বকনিষ্ঠ গোলকিপার হিসেবে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে খেলার নজির স্থাপন করেন।

এসি মিলানে ছয়টি মৌসুম কাটানোর পর, ২০২১ সালে দোন্নারুম্মা ফরাসি ক্লাব প্যারিস সেন্ট জার্মেইনে (পিএসজি) যোগ দেন। পিএসজিতেও তিনি খুব দ্রুতই দলের এক নম্বর গোলকিপারের স্থান দখল করে নেন এবং ক্লাবের হয়ে একাধিক লিগ শিরোপা ও অন্যান্য সম্মাননা অর্জন করেন।

২০২০ ইউরো কাপে ইতালির জয়ে ছিল দোন্নারুম্মার অবদান। তিনি টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন এবং ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টাই-ব্রেকারে দুটি গুরুত্বপূর্ণ শট ঠেকিয়ে ইতালিকে শিরোপা এনে দেন।


 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!