বাংলাদেশের ফুটবলে নতুন উদ্দীপনা আনা মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী এখন কোন ক্লাবে খেলবেন, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা তুঙ্গে। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে দারুণ পারফরম্যান্সের পর ইংল্যান্ডে ফিরে গেছেন এই ইংলিশ প্রবাসী তারকা।
তার ক্লাব ভবিষ্যৎ নিয়ে ফুটবলপ্রেমীদের কৌতূহল তুঙ্গে। শেফিল্ড ইউনাইটেডে ধারে খেলার মেয়াদ শেষ হওয়ায় তিনি কি সেখানেই থাকছেন, নাকি তার মূল ক্লাব লেস্টার সিটিতে ফিরছেন, তা নিয়ে জোর আলোচনা চলছে।
হামজা বর্তমানে ইংল্যান্ডে ফিরেছেন এবং শেফিল্ড ইউনাইটেডের সাথে তার ধারে খেলার চুক্তি শেষ হয়েছে। প্রিমিয়ার লিগ থেকে শেফিল্ডের অবনমন হওয়ায় তাদের পক্ষে হামজাকে ধরে রাখা কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
অন্যদিকে, লেস্টার সিটিও প্রিমিয়ার লিগ থেকে অবনমিত হয়ে আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নশিপে (ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় স্তর) খেলবে। এমন পরিস্থিতিতে লেস্টারের কোচ এনজো মারেসকা হামজাকে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় রাখবেন কিনা, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
লেস্টারের চেয়ে দ্বিগুনের বেশি বেতন পেয়েছেন শেফিল্ডে
ফুটবল অর্থনীতি ও বাণিজ্য নিয়ে গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান ক্যাপোলজির তথ্য অনুযায়ী, শেফিল্ড ইউনাইটেডে ধারে খেলার সময় হামজা চৌধুরী সাপ্তাহিক ৪১ হাজার ৪৭৩ ইউরো (প্রায় ৫৭ লাখ ৮২ হাজার টাকা) বেতন পেতেন।
সেই হিসেবে তার দৈনিক আয় ছিল ৫ হাজার ৯২৪ ইউরো (প্রায় ৮ লাখ ২৬ হাজার টাকা)। ২৭ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত শেফিল্ডের সাথে ১২৪ দিনের চুক্তিতে তার মোট ৭ লাখ ৩৪ হাজার ৫৭৬ ইউরো (প্রায় ১০ কোটি ২৫ লাখ ৪৬ হাজার টাকা) পাওয়ার কথা।
ক্যাপোলজির তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ মৌসুমে হামজাই ছিলেন শেফিল্ডের সর্বোচ্চ বেতনভোগী ফুটবলার।
শেফিল্ডে আসার আগে লেস্টার সিটিতে হামজার সাপ্তাহিক বেতন ছিল ১৭ হাজার ৭৭৪ ইউরো (প্রায় ২৪ লাখ ৭৮ হাজার টাকা), যা শেফিল্ডে পাওয়া বেতনের অর্ধেকেরও কম।
লেস্টারের সাথে তার আরও দুই বছরের চুক্তি আছে। লেস্টারে ফেরার পর তার বেতন আগের মতোই থাকবে নাকি বাড়বে, তা কিছুদিন পর জানা যাবে।
হামজার ভবিষ্যৎ এখন শেফিল্ড নাকি লেস্টার?
বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীরা চান হামজা এমন একটি ক্লাবে খেলুন যেখানে তিনি নিয়মিত খেলার সুযোগ পাবেন এবং নিজের প্রতিভার পূর্ণ বিকাশ ঘটাতে পারবেন। উভয় দলই বর্তমানে চ্যাম্পিয়নশিপে খেলবে।
লেস্টার হামজাকে ধারে শেফিল্ডে পাঠানোর সময় চুক্তিপত্রে উল্লেখ ছিল যে, শেফিল্ড চাইলে তাকে স্থায়ীভাবে কিনে নিতে পারবে। তবে শেফিল্ডের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এমন কোনো প্রস্তাব আসেনি।
শেফিল্ড ইউনাইটেড যদি হামজাকে স্থায়ীভাবে দলে চায়, তাহলে তাদের একটি উল্লেখযোগ্য অঙ্কের ট্রান্সফার ফি দিতে হবে। অন্যদিকে, লেস্টার সিটি যদি তাকে ফিরিয়ে আনে, তাহলে তারা চ্যাম্পিয়নশিপে একজন অভিজ্ঞ মিডফিল্ডারকে পাবে।
তবে, লেস্টারের স্কোয়াডে বর্তমানে বেশ কয়েকজন প্রতিভাবান মিডফিল্ডার রয়েছেন, যার ফলে হামজার নিয়মিত খেলার সুযোগ পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।
আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই হামজা চৌধুরীর ক্লাব ভবিষ্যৎ পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। হামজা কি নতুন করে শেফিল্ডের হয়ে মাঠে নামবেন, নাকি লেস্টারের নীল জার্সিতে প্রত্যাবর্তন করবেন—সেটাই এখন দেখার বিষয়।