ঢাকা বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

লিভারপুলের দলবদলে প্রিমিয়ার লিগের রেকর্ডের পাতা ওলটপালট

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫, ০৭:০০ পিএম
লিভারপুল। ছবি- সংগৃহীত

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল নতুন মৌসুমের শুরুতেই ফুটবল বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। গত বসন্তে তাদের দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের পর, দলের হেড কোচ আর্নে স্লটের অধীনে দলটি যেন আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে।

গত মৌসুমে বড়দিনের পর থেকে তাদের প্রায় কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীই ছিল না, এবং চারটি ম্যাচ বাকি থাকতেই তারা লিগ শিরোপা নিশ্চিত করে ফেলে। শেষ পর্যন্ত, তারা নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর থেকে ১০ পয়েন্টের বিশাল ব্যবধানে লিগ শেষ করে।

তবে এই সাফল্যেই সন্তুষ্ট নয় লিভারপুল। শিরোপা ধরে রাখার মিশনে তারা নেমেছে ইউরোপের ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বড় গ্রীষ্মকালীন ট্রান্সফার ব্যয়ের কার্যক্রমে।

২০২৫ সালের গ্রীষ্মে তারা নতুন খেলোয়াড় কিনতে মোট ৪১৫ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করেছে। এর আগে ব্রিটিশ ট্রান্সফার রেকর্ডের সর্বোচ্চ ছিল চেলসির ২০২৩ সালের ৪০০ মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয়।

এদিকে, লিভারপুল যদি ক্রিস্টাল প্যালেসের ক্যাপ্টেন মার্ক গেহিকে দলে টানতে পারত, তাহলে তাদের খরচ আরও ৩৫ মিলিয়ন পাউন্ড বেড়ে যেত।

রেকর্ড ব্রেকিং সাইনিং

ট্রান্সফার উইন্ডোর লিভারপুলের সবচেয়ে বড় চমক ছিল জার্মান ফুটবলার ফ্লোরিয়ান বার্টজ-কে বায়ার লেভারকুসেন থেকে দলে টানা। তার প্রাথমিক খরচ ছিল ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড, যা কিছু শর্ত পূরণের সাপেক্ষে ১১৬ মিলিয়ন পাউন্ড পর্যন্ত বাড়তে পারে।

এরপর তারা সবাইকে চমকে দিয়ে শেষ মুহূর্তে নিউক্যাসেল ইউনাইটেডের স্ট্রাইকার আলেকজান্ডার ইসাককে ১২৫ মিলিয়ন পাউন্ড (১৩০ মিলিয়ন পাউন্ড পর্যন্ত বাড়তে পারে) রেকর্ড মূল্যে কিনে নিজেদের রেকর্ড আরেক ধাপ এগিয়ে নেয়।

এছাড়া লিভারপুলের অন্যান্য উল্লেখযোগ্য সাইনিংগুলো হলো

আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে স্ট্রাইকার হুগো একিটিকে (৬৯ মিলিয়ন পাউন্ড)

বায়ার লেভারকুসেন এবং বোর্নমাউথ থেকে ফুলব্যাক জেরেমি ফ্রিম্পং ও মিলোশ কারকেজ (৭০ মিলিয়ন পাউন্ড যৌথভাবে)

পার্মা থেকে ইতালীয় কিশোর ডিফেন্ডার জিওভানি লিওনি (২৬ মিলিয়ন পাউন্ড)

বিক্রিতেও শীর্ষে লিভারপুল

নতুন খেলোয়াড় আনার পাশাপাশি লিভারপুল তাদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কেও বিক্রি করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন ডারউইন নুনেজ, লুইস দিয়াজ, জারেল কুয়ানসাহ, কাওমিন কেলেহার এবং বেন গ্যানন-ডক।

এই বিক্রিগুলো থেকে ক্লাব প্রায় ২১০ মিলিয়ন পাইন্ড পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে, যা তাদের আর্থিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করেছে।

লিভারপুলের এই বিশাল রিক্রুটমেন্ট অভিযান ইউরোপের যেকোনো ক্লাবের সাম্প্রতিক গ্রীষ্মকালীন কার্যক্রমকে ছাড়িয়ে গেছে।

যদিও আর্সেনাল, ম্যানচেস্টার সিটি এবং চেলসির মতো ক্লাবগুলোও এই মৌসুমে শক্তিশালী দল গঠনের চেষ্টা করেছে, লিভারপুলের এই বিপুল ব্যয় তাদেরকে তাদের সকল প্রতিদ্বন্দ্বীর থেকে অনেক এগিয়ে রেখেছে।

নতুন কোচ আর্নে স্লটের কাঁধে এখন বিশাল চাপ। গত মৌসুমে তিনি সীমিত বাজেট নিয়েও শিরোপা জিততে পেরেছিলেন, কিন্তু এবার তার হাতে রয়েছে অপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্থিক সমর্থন। এবং বিপুল বিনিয়োগের পর ভক্ত ও ক্লাব কর্তৃপক্ষের প্রত্যাশা এখন আকাশছোঁয়া।