ঢাকা শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

বাংলাদেশ দলে ধীরে ধীরে নিভছে জামালের আলো

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৫, ০৩:৫৭ পিএম
বাংলাদেশ ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া কি তবে একাদশে নিজের জায়গা হারিয়েছেন? সম্প্রতি দলের মূল একাদশে তার অনুপস্থিতি এবং কোচ হাভিয়ের কাবরেরার কৌশলে পরিবর্তন এমন প্রশ্নই জাগিয়ে তুলছে।

দীর্ঘদিন ধরে মাঝমাঠের প্রধান ভরসা হিসেবে বিবেচিত জামাল এখন যেন এক প্রকার ব্রাত্যই হয়ে পড়েছেন, জাতীয় দলে তার আলো ধীরে ধীরে নিভে যাচ্ছে। দলে হামজা চৌধুরী ও শমিত সোমের মতো তরুণদের আগমনেই তার এক সময়ের 'অটোমেটিক চয়েস'-এর দিন ফুরিয়ে গেছে।

শিলংয়ে ভারতের বিপক্ষে বা ঢাকায় সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে, দুই ম্যাচেই কাবরেরা একাদশে জামালকে রাখেননি। বরং তপু বর্মণকে অধিনায়কের দায়িত্ব দিয়ে দল সাজিয়েছিলেন।

নেপাল সিরিজেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে কিনা, সেই প্রশ্ন জামালকে করা হলে তিনি কোনো সরাসরি উত্তর দিতে পারেননি। শুধু বলেছেন, একজন খেলোয়াড় হিসেবে সবাই খেলতে চায়, তিনিও চান। তার এই অনিশ্চিত মন্তব্যই যেন দলের ভেতরের পরিস্থিতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।

তবে দলে তার জায়গা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও, হংকং ম্যাচের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে নেপাল সিরিজকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন জামাল।

গতকালের সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আগামী মাসে আমাদের এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ আছে হংকংয়ের বিপক্ষে। তাই এই দুটি ম্যাচ আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা মুখিয়ে আছি।

এই সিরিজে হামজা ও শমিতের মতো খেলোয়াড়রা নেই। এছাড়া আরও পাঁচজন ফুটবলার এএফসি অনূর্ধ্ব-২৩ বাছাইপর্বে থাকায়, মূলত নতুনদের নিয়েই দল সাজাতে হয়েছে। এরপরও জামাল বিশ্বাস করেন, দলের ভেতরে একটি সুস্থ প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে।

তিনি বলেন, আমি খেলব কি খেলব না, সেটা আমার হাতে নেই। সেটা টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত। তবে অবশ্যই একজন খেলোয়াড় হিসেবে সবাই খেলতে চায়। আমাদের দলে ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে, আর ফুটবল মানেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা। নিজের সর্বোচ্চটা দিলে তবেই হয়তো জায়গা মিলবে দলে।

দীর্ঘদিন ধরে নেপালের ঘরোয়া ফুটবল অনিয়মিত হওয়ায় সেখানকার ফুটবলারদের উন্নতি কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করেন জামাল। তিনি বলেন, আমার মনে হয় প্রতিটি দেশের জন্যই শক্তিশালী লীগ থাকা জরুরি। যদি শক্তিশালী লীগ থাকে, তবে স্থানীয় খেলোয়াড়েরা উন্নতি করবে।

আর দেশের ফুটবলও উন্নতি করবে। শক্তিশালী লীগ মানে ভালো অবকাঠামো, ভালো স্টেডিয়াম, ভালো সুযোগ-সুবিধা।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে নেপালি ফুটবলারদের বাংলাদেশে খেলতে আসায় এই অবস্থার উন্নতি হবে বলেও তিনি আশা করেন। এই মৌসুমে আটজন নেপালি খেলোয়াড় বাংলাদেশের লীগে নাম লিখিয়েছেন, যাদের মধ্যে চারজন ব্রাদার্স ইউনিয়নে যোগ দিয়েছেন।

প্রতিপক্ষ নেপালকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, আমার মনে হয় নেপাল আরও শক্তিশালী হয়েছে। বিশেষ করে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ওদের পারফরম্যান্স দেখে বোঝা যায়। সিঙ্গাপুরে গিয়ে খেলাটা সহজ নয়।

তাই গত কয়েক মাসে নেপাল আরও শক্তিশালী হয়েছে। এখানে খেলতে আসাটাও প্রতিপক্ষের জন্য সবসময় কঠিন। তবে সামগ্রিকভাবে বলতে গেলে নেপাল দল ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে উঠছে।