স্কাই নিউজে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন প্রশাসনের শেষ দুই বছর পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মিলার বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধ যে ঘটেছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে তিনি এক্ষেত্রে 'গণহত্যা' শব্দটি প্রয়োগ করতে রাজি হননি।
সোমবার (২ জুন) ম্যাথিউ মিলার, সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র, সম্প্রতি গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর যুদ্ধাপরাধের বিষয়টি সম্পর্কে “যুদ্ধাপরাধ যে ঘটেছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।” মন্তব্য করেন তবে তিনি 'গণহত্যা' শব্দটি ব্যবহারে বিরত থাকেন।
মিলার আরও বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধ দুটি দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করা যায়। প্রথমত, কোনো রাষ্ট্র যদি পরিকল্পিতভাবে যুদ্ধাপরাধ ঘটায় বা এমনভাবে কাজ করে যা যুদ্ধাপরাধকে উসকে দেয়—তবে সেটি রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতার বিষয়।’ তিনি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের বিষয়ে বলেন, ‘গাজা প্রসঙ্গে পুরো রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েল যুদ্ধাপরাধ করছে কি না, সেটা এখনো অমীমাংসিত প্রশ্ন। কিন্তু কিছু নির্দিষ্ট ঘটনার ক্ষেত্রে ইসরায়েলি সেনারা যুদ্ধাপরাধ করেছে—এটি নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।’
মিলার আরও উল্লেখ করেন, ‘প্রায় প্রতিটি বড় সংঘাতে, এমনকি গণতান্ত্রিক দেশগুলোর সামরিক অভিযানেও কিছু সেনা সদস্য যুদ্ধাপরাধে জড়ায়। একটি গণতন্ত্র কেমন তা নির্ধারিত হয় তারা এসব অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনে কি না, তার ওপর।’ তিনি বলেন, ‘এখনো পর্যাপ্ত সংখ্যক ইসরায়েলি সেনাকে জবাবদিহির আওতায় আনা হয়নি। এবং সেটি হবে কি না, সেটিও একটি খোলা প্রশ্ন।’
মিলার জানান, গাজা যুদ্ধ নীতিকে ঘিরে বাইডেন প্রশাসনের ভেতরেই মতবিরোধ ছিল, বিশেষ করে ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করা নিয়ে। তিনি বলেন, ‘ওই সময় যখন আমরা অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের বিষয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা করছিলাম, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাম্পাসজুড়ে প্রতিবাদ চলছিল, ইউরোপের কিছু দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিচ্ছিল। হামাসের নেতারা তখন ভাবছিল, অস্ত্র আসবে না আর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়বে। ইরান বা হিজবুল্লাহ যুদ্ধে অংশ নিতে পারে।’
২০২৪ সালে বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলে ২০০০ পাউন্ডের বোমার চালান স্থগিত করেছিল। মিলার সে প্রসঙ্গে বলেন, ‘গাজায় ওই অস্ত্র ব্যবহার উপযুক্ত হবে না বলেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।’
তিনি অনুশোচনাভরে বলেন, ‘২০২৪ সালের মে থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত হাজার হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে আমরা কি আরো কিছু করতে পারতাম যাতে ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করানো যায়? সম্ভবত পারতাম।’ তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর দিকেও আঙুল তুলেছেন। ‘হামাস যেমন বারবার দাবি বদলেছে, নেতানিয়াহুও তাই করেছে। অনেক সময় আমরা তাদের ওপর আরো কঠোর হতে পারতাম।’
আপনার মতামত লিখুন :