বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (এমইএ) জানিয়েছে, লজিস্টিক সীমাবদ্ধতার কারণে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সাংবাদিকদের উদ্দেশে মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘কী কী কারণে বাংলাদেশ আগে দুই দেশের বাণিজ্য সুবিধা বন্ধে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা একটু খতিয়ে দেখবেন।’
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ভারতীয় বন্দর ও বিমানবন্দরে ক্রমবর্ধমান ভিড়ের কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা-সংক্রান্ত বাণিজ্য বিষয়ে, আমাদের বন্দর ও বিমানবন্দরে ভিড়ের কারণে আমরা এ পদক্ষেপ নিয়েছি। আমি আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, এর আগে বাংলাদেশ যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তা দয়া করে বিবেচনা করুন।’
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্র ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সিএনএন-নিউজ১৮কে জানিয়েছে, ঢাকার তিনটি সিদ্ধান্ত ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার বর্তমান অবস্থার জন্য দায়ী হতে পারে।
প্রথমত, সম্প্রতি বাংলাদেশ খরচের পার্থক্যের কারণ দেখিয়ে ভারত থেকে সুতা আমদানির ক্ষেত্রে স্থলবন্দর ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছে। এ পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকদের মধ্যে তীব্র সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। তারা এ সিদ্ধান্তকে তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাতের জন্য ‘আত্মঘাতী’ বলে অভিহিত করেছেন।
ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বলতে এমন একটি প্রক্রিয়াকে বোঝায়, যেখানে একটি বন্দর বা হাবে পণ্য বা কার্গো একটি জাহাজ, যানবাহন বা পরিবহন মাধ্যম থেকে অন্যটিতে স্থানান্তরিত হয় এবং তারপর চূড়ান্ত গন্তব্যে পাঠানো হয়। ২০২০ সালে ভারত বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা চালু করে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশি রপ্তানিকারকেরা ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমারের মতো তৃতীয় দেশগুলোতে পণ্য পরিবহনের জন্য ভারতীয় ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন (এলসিএস) ব্যবহার করতে পারতেন। উদ্যোগটি বাণিজ্য প্রক্রিয়া সহজ করতে, লজিস্টিক খরচ কমাতে এবং পরিবহন সময় ও খরচ হ্রাস করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতকে সমর্থন করার লক্ষ্যে গৃহীত হয়েছিল।
এ সিদ্ধান্তের পেছনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের বেইজিং সফরের প্রভাব রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সেখানে তিনি ভারতের সেভেন সিস্টার্স নিয়ে একটি বিতর্কিত বক্তব্য দিয়েছিলেন। তিনি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে চীনের শক্তিশালী বাণিজ্য সম্পর্কের পক্ষে কথা বলেন এবং এ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
সূত্রগুলো আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশ সরকারের দ্বিতীয় পদক্ষেপ হিসেবে একটি প্যানেল গঠন করা হয়। এই প্যানেল আর্থিক ক্ষতি ও নিষ্ক্রিয়তার কারণ দেখিয়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে তিনটি স্থলবন্দর সম্পূর্ণ বন্ধ করার সুপারিশ করে। একই প্যানেল আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দরের কার্যক্রম স্থগিতের পরামর্শ দিয়েছিল।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশের অন্যতম ব্যস্ত স্থলবন্দর বেনাপোল কাস্টম হাউস একটি বিশেষ তদন্ত ও ব্যবস্থাপনা ইউনিট গঠন করেছে। এ ইউনিটের লক্ষ্য রাজস্ব তদারকি ও প্রয়োগ কঠোর করা, যার ফলে বাণিজ্য করিডরে নিয়ন্ত্রণ আরও কঠোর হয়েছে।

 
                             
                                     সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন