ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনীর প্রবল হামলার মুখে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমানবাহী রণতরী ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান লোহিত সাগর থেকে সরে আরও উত্তর দিকে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।
সম্প্রতি হুতিদের হামলা থেকে বাঁচতে গিয়ে এ রণতরী থেকে ৬৭ কোটি ডলার মূল্যের একটি এফ-এ-১৮-ই সুপার হর্নেট যুদ্ধবিমান সাগরে পড়ে যায়।
এ ছাড়াও ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনীর ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষিতর মুখে পড়ার পর মার্কিন বাহিনী পিছু হটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।
সংবাদমাধ্যম তেহরান টাইমসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান রণতরী ও এর সঙ্গে থাকা অন্য যুদ্ধজাহাজগুলো শিগগিরই লোহিত সাগর অঞ্চল ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে।
অন্যদিকে, মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) ইয়েমেনের আল-মাসিরাহ টেলিভিশন দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রের মাধ্যমে জানায়, শিগগিরই ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান রণতরী ও এর সঙ্গে থাকা যুদ্ধজাহাজগুলো লোহিত সাগর অঞ্চল ত্যাগ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইয়েমেনি সূত্রটির দাবি, ‘আমরা ট্রুম্যান রণতরীতে সরাসরি আঘাত হানার খবরটি নাকচ করছি না। আমরা যেকোনো মুহূর্তে এটিকে লোহিত সাগর এলাকা ত্যাগ করতে দেখতে পারি।’
এদিকে, ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী সোমবার একটি হামলার দায় স্বীকার করে জানায়, হামলাটি ছিল মার্কিন হামলায় ইয়েমেনে বেসামরিক নাগরিক হতাহতের প্রতিবাদে পাল্টা জবাব।
তাদের দাবি, নৌ, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র বাহিনীর সমন্বয়ে পরিচালিত যৌথ অভিযানে ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান এবং এর সঙ্গে থাকা যুদ্ধজাহাজগুলো ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
এর ফলে রণতরী ট্রুম্যান উত্তরদিকে সরে যেতে বাধ্য হয়।
এদিকে, আরেকটি হামলার ঘটনা থেকে বাঁচতে গিয়ে ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান থেকে একটি এফ-এ-১৮-ই সুপার হর্নেট যুদ্ধবিমান লোহিত সাগরে পড়ে যায়।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, রণতরীটি আসন্ন হামলা এড়াতে হঠাৎ কৌশলগত মোড় নিলে হ্যাঙ্গার ডেকে ল্যান্ড করা যুদ্ধবিমানটি এবং একে টেনে নিয়ে যাওয়া একটি ট্রাক- উভয়ই জাহাজ থেকে সাগরে পড়ে ডুবে যায়।
বিশ্লেষকদের দাবি, ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান যদি লোহিত সাগর অঞ্চল ছেড়ে গেলে তা প্রথম কোনো ঘটনা হবে না। কেননা, এর আগেও একাধিক মার্কিন রণতরী ইয়েমেনি পাল্টা হামলার কারণে এ অঞ্চল থেকে পালিয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, যতদিন পর্যন্ত গাজায় গণহত্যা ও অবরোধ চলবে এবং ইয়েমেনে মার্কিন হামলা বন্ধ না হবে, ততদিন লোহিত সাগর ও আরব সাগরে মার্কিন সামরিক লক্ষ্যবস্তুর বিরুদ্ধে হামলা অব্যাহত থাকবে।
সূত্র: মেহের নিউজ