মেঘালয়ের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র সোহরায় হানিমুন করতে গিয়ে মর্মান্তিক ঘটনার শিকার হয়েছেন মধ্যপ্রদেশের নবদম্পতি রাজা রাজবংশী ও সোনম রাজবংশী। স্বামী রাজা রাজবংশী (২৯) খুন হয়েছেন এবং স্ত্রী সোনম রাজবংশী (২৭) এখনো নিখোঁজ। এই হৃদয়বিদারক ঘটনার পর মেঘালয় জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে চাঞ্চল্য।
ইতোমধ্যেই এই ঘটনায় তদন্তে নেমেছে একাধিক নিরাপত্তা ও উদ্ধারকারী সংস্থা। নিখোঁজ সোনমের সন্ধানে ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রোনসহ আধুনিক প্রযুক্তি।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার বরাতে জানা যায়, নিখোঁজ সোনমকে খুঁজে পেতে মাঠে নেমেছে ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ), স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এসডিআরএফ), ফায়ার ও ইমার্জেন্সি সার্ভিস, স্পেশাল অপারেশনস টিম, স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা।
গত শুক্রবার দুর্গম এলাকায় প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও অভিযান চালানো হয়। তবে কুয়াশা ও সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসায় ওইদিন সন্ধ্যায় অভিযান স্থগিত করা হয়। শনিবার সকাল থেকে আবারো অভিযান শুরু হয়েছে।
রাজা রাজবংশীর লাশ উদ্ধারের পর তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করা যায়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে তদন্ত জোরদার করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কারা, কী উদ্দেশ্যে এই হামলা চালিয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।
তবে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যক্তিগত শত্রুতা, অপরাধচক্রের সংশ্লিষ্টতা কিংবা পার্বত্য অপরাধীদের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হয়নি।
ঘটনার পর রাজ্যজুড়ে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। মেঘালয়ের বিরোধী দলনেতা ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মুখুল সাংমা এই ঘটনাকে রাজ্য সরকারের জন্য এক “সতর্কবার্তা” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, এই দম্পতি মেঘালয়কে সবচেয়ে নিরাপদ পর্যটন গন্তব্য হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই হানিমুনের গন্তব্যই এক ভয়ঙ্কর স্মৃতিতে রূপ নিল। রাজ্য সরকারকে এখনই জাগতে হবে।
তিনি আরও বলেন, মেঘালয় রেসিডেন্টস সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাক্ট, ২০১৬ কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে, যেখানে পর্যটন এলাকায় সিসিটিভি বসানো বাধ্যতামূলক।
রাজা রাজবংশীর পরিবার এই ঘটনায় শোকাহত। তারা দ্রুত সোনমকে খুঁজে বের করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারও দাবি করেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :