ঢাকা শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫

ইরানে হামলার আগে যে ‘গোপন’ ছক কষেছিল ইসরায়েল

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২৫, ০৮:২৮ পিএম
ছবি- রূপালী বাংলাদেশ গ্রাফিক্স

ইরানের ভেতরেই ‘গোপন’ ড্রোনঘাঁটি গড়ে ইসরায়েল। তারপর মোসাদ কমান্ডোরা মধ্য ইরানে ‘অনুপ্রবেশ’ করে। এরপর ‘পরিকল্পিত ও নিখুঁত’ হামলা পরিচালিত হয়। পরে হামলায় অংশ নেওয়া পাইলটরা ‘নিরাপদে’ ফিরে আসেন। ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তার মতে, ইরানের সামরিক সক্ষমতাকে আঘাত করা হয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। 

রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, মোসাদের কমান্ডো ইউনিট হামলার আগেই ইরানের ভেতরে গোপনে একাধিক অভিযান পরিচালনা করে। এতে তেহরানের কাছে একটি অ্যাটাক-ড্রোন ঘাঁটি, ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার আশপাশে নির্ভুল ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপন এবং ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার কাছে গোপন অস্ত্র মোতায়েন করা ছিল।

ইরানের ভেতরেই ঘাঁটি গড়েছিল মোসাদ

ইরানে সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে ইসরাইলের পরিচালিত সাম্প্রতিক হামলা ছিল পরিকল্পিত ও নিখুঁত। এ অভিযানে ব্যবহার করা হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি ও গোপন ঘাঁটি। এ ছাড়া ছিল গোয়েন্দা তথ্যের নিখুঁত সমন্বয়। ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের ‘নিখুঁত’ পরিকল্পনায় হামলা চালিয়ে ইরানের সামরিক সক্ষমতায় আঘাত করা হয়।

ইসরাইলি বাহিনীর মতে, এই অভিযানের নাম ছিল ‘রাইজিং লায়ন’ (উদীয়মান সিংহ)। ইরানের একাধিক সামরিক লক্ষ্যবস্তু বিশেষ করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও কমান্ড সেন্টারগুলো এ হামলার প্রধান লক্ষ্য ছিল।

একজন ইসরাইলি সামরিক কর্মকর্তা জানান, হামলায় অংশ নেওয়া সব পাইলট নিরাপদে ফিরে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা একযোগে হামলা চালিয়ে ইরানের সামরিক সক্ষমতাকে আঘাত করেছি।’

টাইমস অব ইসরায়েলের ‘চাঞ্চল্যকর’ রিপোর্ট

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, ইরানের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিকে দুর্বল করতে ইসরায়েল বহু বছর ধরে সুপরিকল্পিত গোপন অভিযান পরিচালনা করে আসছে। এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বাস্তবায়ন করা হয় তিন ধাপে গঠিত একটি জটিল সামরিক কৌশল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মোসাদ এজেন্টরা তেহরানের আশেপাশে একটি অ্যাটাক ড্রোনঘাঁটি স্থাপন করে। পরে সেখান থেকে গভীর রাতে ড্রোন পাঠিয়ে ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র সাইটে নিশানাভেদী হামলা চালানো হয়। এই ড্রোনঘাঁটির অস্তিত্ব প্রকাশিত হওয়ার পর ইরানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর বিশ্বজুড়ে প্রশ্ন উঠেছে।

দ্বিতীয় ধাপে মোসাদ গোপনে উন্নত অস্ত্র ইরানে প্রবেশ করায়। সেসব অস্ত্রের মধ্যে ছিল সাইবার হামলার যন্ত্র, জ্যামিং ডিভাইস এবং ক্ষুদ্রাকৃতির অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র। এসব অস্ত্র ব্যবহার করে ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে অচল করে দেওয়া হয়, যাতে ইসরায়েলি বিমানগুলো নির্বিঘ্নে আকাশসীমায় প্রবেশ করতে পারে।

তৃতীয় স্তরে মোসাদ কমান্ডোরা মধ্য ইরানে অনুপ্রবেশ করে। তারা ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা সাইটের নিকটে ক্ষুদ্র, কিন্তু অত্যন্ত শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করে, যেগুলো লক্ষ্যবস্তু ধ্বংসে সক্ষম। 

এ অপারেশন ইরানের নিরাপত্তা কাঠামোর  ফাঁকফোকরকে প্রকাশ করেছে বলে বিশেষজ্ঞদের মত।