শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২৫, ১০:৫৬ পিএম

চুক্তি অনুযায়ী চীন কি ইরানের পাশে থাকবে?

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২৫, ১০:৫৬ পিএম

ইরান ও চীনের বন্ধুত্বের প্রতীকী ছবি

ইরান ও চীনের বন্ধুত্বের প্রতীকী ছবি

ইরানে পরিচালিত ইসরায়েলের ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ অভিযানের ঘটনায় তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ইরানের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার ওপর যেকোনো ধরনের লঙ্ঘনের বিরোধিতা করে বেইজিং। এখন প্রশ্ন- চুক্তি অনুযায়ী চীন কি পাশে থাকবে ইরানের? 

ইরান ও চীনের মধ্যে ২৫ বছর মেয়াদি ‘কৌশলগত সহযোগিতার’ চুক্তি রয়েছে। চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয় ২০২১ সালের ২৭ মার্চ তেহরানে। এটিকে মধ্যপ্রাচ্য ও বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল তখন। কেননা যুক্তরাষ্ট্রের ‘রক্তচক্ষু’ উপেক্ষা করে চীন ও ইরান ২৫ বছরের এই ‘কৌশলগত সহযোগিতার‘ চুক্তি  চূড়ান্ত করে। 

কী আছে চীন-ইরানের চুক্তিতে?

২৫ বছর মেয়াদি এই চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো দুই দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতার ‘গভীরীকরণ’। এতে রয়েছে যৌথ সামরিক মহড়া ও প্রশিক্ষণ, অস্ত্র নির্মাণে গবেষণা ও সহযোগিতা এবং গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগির মতো বিষয়।

চুক্তির আওতায় চীন ২৫ বছরে ইরানের অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে প্রায় ৪০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (৪০ হাজার কোটি ডলার) বিনিয়োগ করবে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রগুলো হলো- প্রাকৃতিক গ্যাস ও খনিজ তেল উত্তোলন, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত, টেলিযোগাযোগ, বন্দর ও রেলব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা এবং তথ্যপ্রযুক্তি।

এর বিনিময়ে ইরান চীনের জন্য নিয়মিত, স্থিতিশীল ও হ্রাসকৃত মূল্যে খনিজ তেল সরবরাহ করবে।

বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, চুক্তিটি কেবল দ্বিপাক্ষিক নয়, বরং বিশ্বশক্তির ভারসাম্যে পরিবর্তন আনার মতো প্রভাব ফেলতে পারে।

ইরানে হামলা অব্যাহত থাকলে কী করবে চীন?

চুক্তি অনুযায়ী ইরানের পাশে থাকার কথা চীনের। যেহেতু চুক্তিতে যৌথ সামরিক মহড়া ও প্রশিক্ষণ, অস্ত্র নির্মাণে গবেষণা ও সহযোগিতা এবং গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগির মতো বিষয় নিয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি রয়েছে।

এ ছাড়া চুক্তিটিকে সামরিক সহযোগিতার ‘গভীরীকরণ’ হিসেবে উল্লেখ করেছিল দেশ দুটি। সে হিসেবে চীন ইরানের পাশে থাকতে পারে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। 

ইরানে ইসরায়েলি হামলার পর চীন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, ‘চীন ইরানের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার ওপর যেকোনো ধরনের লঙ্ঘনের বিরোধিতা করে।’ এ বক্তব্যে পাশে থাকার ইঙ্গিত রয়েছে বলে মনে করছেন ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, চীন ইরানকে সামরিক ও প্রযুক্তিগতভাবে সহযোগিতা দিতে পারে।   

এদিকে, ইরানে ইসরায়েলের হামলার পর শুক্রবার (১৩ জুন) চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘ইসরায়েলের এই সামরিক পদক্ষেপের সম্ভাব্য গুরুতর পরিণতি নিয়ে চীন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’

তিনি বলেন, ‘চীন ইরানের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার ওপর যেকোনো ধরনের লঙ্ঘনের বিরোধিতা করে। আমরা উত্তেজনা বৃদ্ধির বিপক্ষে এবং সংঘাত প্রশমনের পক্ষে। আঞ্চলিক উত্তেজনার হঠাৎ উত্থান কোনো পক্ষেরই স্বার্থে নয়।’

মুখপাত্র জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানে চীন গঠনমূলক ভূমিকা পালনে প্রস্তুত।

এর আগে শুক্রবার ভোরে ইসরায়েল বিশাল সামরিক অভিযানের মাধ্যমে ইরানের বিভিন্ন স্থাপনায় আঘাত হানে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর বরাতে জানা যায়, প্রায় ২০০টি যুদ্ধবিমান এই অভিযানে অংশ নেয় এবং ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটিগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালায়।

হামলায় ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা এবং কয়েকজন পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতি মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে যুদ্ধ ও অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে, যা বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও জ্বালানি বাজারেও বিরূপ প্রভাব ফেলবে।

চুক্তি অনুযায়ী ইরানে সৈন্য মোতায়েন করতে পারবে চীন

২০২১ সালের ২৭ মার্চ ইরান ও চীনের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চুক্তি অনুযায়ী ইরানে সৈন্য মোতায়েন করতে পারবে চীন। নিউইয়র্ক টাইমস ও হংকং-ভিত্তিক এশিয়া টাইমসসহ বেশ কিছু শীর্ষ সারির মিডিয়া বলছে, তারা ১৮-পাতার খসড়া চুক্তিটি দেখেছে।

সেই সূত্রে এবং বিভিন্ন সূত্রে প্রকাশিত নানা তথ্যের ভিত্তিতে যা জানা গেছে, তাতে ইরানের তেল-গ্যাস, ব্যাংকিং, টেলিকম, বন্দর উন্নয়ন, রেলওয়ে উন্নয়ন এবং আরও কয়েক ডজন খানেক গুরুত্বপূর্ণ খাতে চীন ব্যাপক বিনিয়োগ করবে।

এই বিনিয়োগের পরিমাণ ২৫ বছরে কমপক্ষে ৪৪ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ হতে পারে।

সেই সঙ্গে প্রস্তাবিত চুক্তিতে সামরিক ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যৌথ প্রশিক্ষণ, মহড়া, গবেষণা, যুদ্ধাস্ত্র তৈরি এবং গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদানের কথা রয়েছে।

মিডল-ইস্ট আই-এর একটি রিপোর্টে লেখা হয়েছে, চুক্তির আওতায় চীন তাদের বিনিয়োগের সুরক্ষায় ইরানে পাঁচ হাজার পর্যন্ত সৈন্য মোতায়েন করতে পারবে।

চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যে সরাসরি চীনা সামরিক উপস্থিতির সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এ নিয়ে বেশকিছু প্রথম সারির আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল।

এখন দেখার বিষয় তইরানে ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত থাকবে কি না। আর হামলা অব্যাহত থাকলে চীন সেখানে কী ভূমিকা পালন করে। চুক্তিটির ৫ বছর অতিবাহিত হয়েছে। ইরানে ইসরায়েলের হামলায় চীন কী পদক্ষেপ নেয় তার ওপর ২৫ বছর মেয়াদি এই চুক্তির ‘কার্যকারিতা’ বোঝা যাবে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!