ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বড় ধরনের হামলায় ব্যবহৃত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম- ভারী বোমারু বিমান, বাংকার ধ্বংসকারী বোমা এবং দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র।
এতে ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
রোববার (২২ জুন) রাতে যুক্তরাষ্ট্র তাদের অত্যাধুনিক অস্ত্রভান্ডার থেকে ইরানের প্রধান পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে সমন্বিত এ হামলা চালায়।
হামলায় ব্যবহার করা হয় ‘বি-২ স্পিরিট’ নামে পরিচিত কৌশলগত বোমারু বিমান এবং সমুদ্র থেকে নিক্ষেপযোগ্য ‘টমাহক’ ধরনের দূরপাল্লার ‘ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র’।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশে পরিচালিত এই অভিযানে ‘বি-২ বোমারু‘ বিমান ৫ থেকে ৬টি বিশেষ ধরণের ‘বাংকার ব্লাস্টার’ বোমা নিক্ষেপ করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলায় ইরানের নাতানজ ও ইসফাহান এলাকায় অবস্থিত পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ৬৪০ কিলোমিটার দূর থেকে ছোড়া ৩০টি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। এ হামলার মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের অত্যন্ত সুরক্ষিত পারমাণবিক কেন্দ্র ফোর্দো।
মার্কিন সামরিক প্রস্তুতি
এদিকে এই হামলার কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে বিশাল সামরিক বাহিনী মোতায়েন করেছিল। এর মধ্যে ছিল বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস নিমিটজ, এফ-১৬, এফ-২২ এবং এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানসহ বি-২ বোমারু বিমান।
জানা যায়, এই অভিযান শেষ হওয়ার পর পরই বোমারু বিমানগুলো প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে ফিরে গেছে।
এ বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা যুদ্ধবিরতি চাই না। আমরা সম্পূর্ণ বিজয় চাই। আর বিজয় মানে হলো- ইরান যেন পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে।’
ব্যবহৃত অস্ত্রের বিস্তারিত বিবরণ
বাংকার ব্লাস্টার বোমা (জিবিইউ-৫৭)
ওজন: প্রায় ১৪ হাজার থেকে ৩০ হাজার পাউন্ড।
শক্তিশালী পাথরে প্রবেশ ক্ষমতা: প্রায় ২০০ মিটার।
বিস্ফোরণ: দেরিতে বিস্ফোরণ ঘটে, যাতে গভীর ভূগর্ভস্থ কাঠামো ধ্বংস হয়।
পরিচালনা: স্যাটেলাইটের মাধ্যমে নির্ভুল নিয়ন্ত্রণ।
দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র (টমাহক)
পাল্লা: সর্বোচ্চ প্রায় ২,৫০০ কিলোমিটার।
গতি: ঘণ্টায় প্রায় ৮৮০ কিলোমিটার।
ওজন: প্রায় ৪৫০ কেজি বিস্ফোরক।
নির্ভুলতা: ১০ মিটারের মধ্যে লক্ষ্যভেদ ক্ষমতা।
নিক্ষেপ: যুদ্ধজাহাজ এবং পানির নিচে সাবমেরিন থেকে ছোড়া হয়।
বি-২ স্পিরিট বোমারু বিমান
নির্ভুলতা: রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম।
উড্ডয়নের পাল্লা: জ্বালানি ভরার প্রয়োজন ছাড়াই ১১ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত উড্ডয়ন।
সর্বোচ্চ বোমার ধারণক্ষমতা: প্রায় ২৩ হাজার কিলোগ্রাম।
দুই পাইলট ৪৪ ঘণ্টা টানা উড্ডয়ন করতে সক্ষম।
আপনার মতামত লিখুন :