ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের মুসলিম অধ্যুষিত শহর মালেগাঁওয়ে ২০০৮ সালে ঘটে যাওয়া প্রাণঘাতী বিস্ফোরণ মামলায় সাত অভিযুক্তকে খালাস দিয়েছেন মুম্বাইয়ের একটি বিশেষ আদালত। ঘটনার প্রায় ১৭ বছর পর এই রায় ঘোষণা করা হলো।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে মালেগাঁওয়ে একাধিক বিস্ফোরণে অন্তত ছয়জন নিহত এবং প্রায় ১০০ জন আহত হন।
তদন্তে জানা যায়, মালেগাঁও শহরে মসজিদ লাগোয়া কবরস্থানে একটি মোটরসাইকেলে দুটি বোমা রাখা ছিল। তাতেই বিস্ফোরণ ঘটে। ঘটনার তদন্তে নামে মহারাষ্ট্রের সন্ত্রাসদমন শাখা (এটিএস)।
খালাস পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সাবেক সংসদ সদস্য প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর এবং সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল শ্রিকান্ত প্রসাদ পুরোহিত।
আইনি পোর্টাল লাইভ ল-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিচারক রায়ে বলেছেন, প্রসিকিউশন এই বিষয়ে যথাযথভাবে প্রমাণ করতে পারেনি যে বিস্ফোরণের জন্য ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি প্রজ্ঞারই ছিল।
আদালত আরও বলেন, বিস্ফোরণ যে হয়েছে সেটি প্রমাণিত হলেও মোটরসাইকেলে বিস্ফোরক বসানো হয়েছিল—এই দাবি প্রমাণ করা যায়নি।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল পুরোহিত প্রসঙ্গে আদালত জানায়, তিনি এক ডানপন্থি গোষ্ঠীর জন্য বিস্ফোরক কেনার অর্থ জোগাড় করা ও ষড়যন্ত্রমূলক বৈঠক আয়োজনের অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন। তবে রায়ে বলা হয়েছে, ‘তার বাড়িতে বিস্ফোরক সংরক্ষণ বা প্রস্তুতির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’
মুম্বাইয়ের বিশেষ আদালত তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইন আনলফুল অ্যাক্টিভিটিস (প্রিভেনশন) অ্যাক্ট (ইউএপিএ)-সহ সব অভিযোগ থেকে মুক্তি দিয়েছেন।
এদিকে, ভুক্তভোগী পরিবারের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। প্রাথমিকভাবে মামলাটি তদন্ত করেছিল মহারাষ্ট্র অ্যান্টি-টেররিজম স্কোয়াড (এটিএস)। পরে ২০১১ সালে এটি ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)-এর কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এই মামলাটি ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ এক ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়, কারণ এটিই ছিল প্রথম বড় মামলা যেখানে ডানপন্থি হিন্দু জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে সরাসরি সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগ আনা হয়েছিল।
বছরের পর বছর ধরে মামলাটিতে নানা নাটকীয় মোড় আসে। বিচারপ্রক্রিয়ায় ৩০০’র বেশি সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হয়, যার মধ্যে অন্তত ৩৪ জন সাক্ষী পরে প্রত্যাহার করে নেন।
২০১৬ সালে এনআইএ নতুন চার্জশিট জমা দিয়ে জানায়, প্রজ্ঞা এবং আরও তিনজনের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ মেলেনি এবং তারা তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহারের সুপারিশ করে। তবে আদালত ওই তিনজনকে খালাস দিলেও, প্রজ্ঞাকে বিচারের মুখোমুখি হওয়ার নির্দেশ দেয়। ২০১৮ সালে একটি এনআইএ বিশেষ আদালত বাকি সাতজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ, হত্যা, ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানো এবং ষড়যন্ত্রের ধারায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে।
প্রথমে মে মাসে রায় ঘোষণার কথা থাকলেও বিচারক সব অভিযুক্তকে আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়ায় রায়ের তারিখ পিছিয়ে যায়। এখন আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায় বিশ্লেষণ করে উচ্চ আদালতের রায়ের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে দেশ।

 
                             
                                    


 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
       -20251031183405.webp) 
        
        
        
       -20250905162745-(2)-20250919184044-20250926173705-20251010164039-20251011171436-(1)-20251017163112-(1)-20251031181224.webp) 
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন