দাম্পত্য সঙ্গী হোক বা প্রেমিক-প্রেমিকা, বহু পুরুষ ও নারী নিষিদ্ধ সম্পর্কের প্রলোভনে পড়েছেন। কথায় আছে, ‘প্রেমের ফাঁদ পাতা সর্বত্র’। এই ফাঁদে পা দিয়ে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন অনেকে। আবার অনেকেই বিবাহিত জীবন থেকে সুখ খুঁজে না পেয়ে অন্য কারও প্রতি আকৃষ্ট হন।
যদিও সম্পর্ক নিষিদ্ধ, কিন্তু যুগ যুগ ধরে মানুষের মধ্যে এর প্রতি আকর্ষণ থেকে গেছে। অন্যদিকে, যারা এসব সম্পর্ক অপছন্দ করেন, তারা সঙ্গী ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বা যৌন সম্পর্ককে প্রতারণা মনে করেন। তবে প্রেম বা পরকীয়া কোনো নিয়মের বাঁধন নয়। নতুন যুগে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের সংজ্ঞা বদলেছে এবং এটি এখন আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।
যদি প্রশ্ন ওঠে কোন দেশের বাসিন্দারা সম্পর্কের ক্ষেত্রে সঙ্গীকে সবচেয়ে বেশি প্রতারণা করেন, তা হলে হয়তো অধিকাংশেরই মাথায় ঘুরতে পারে প্রথম বিশ্বের দেশগুলোর নাম। অনেকেরই মনে হতে পারে এই তালিকার প্রথম নামটি হয়তো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অনেকেই আবার ইউরোপের কোনও দেশের নাম বাছতে বসে যেতে পারেন।
২০২৫ সালে ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউয়ের একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছিল এক চমকপ্রদ তথ্য। বিশ্বাসঘাতকতার প্রবণতা কোন দেশের অধিবাসীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তা নিয়ে বিশ্বব্যাপী একটি সমীক্ষা করা হয়। কোন দেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি পরকীয়ায় জড়ান এই সমীক্ষার একেবারে শীর্ষে রয়েছে এশীয় একটি দেশ। সমীক্ষায় খোলসা হয়েছে পরকীয়ায় ‘ফার্স্ট বয়’-এর নাম।
এই তালিকায় একেবারে প্রথমে রয়েছে থাইল্যান্ডের নাম! এখানে বিবাহিতদের ৫১ শতাংশ স্বীকার করেছেন যে তারা তাদের সঙ্গীকে প্রতারণা করেছেন। অর্থাৎ দেশটির বিবাহিত দম্পতিদের অর্ধেকেরও বেশি তাদের সঙ্গীকে সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রতারণা করেছেন।
থাইল্যান্ডের অনেকেই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ককে গুরুতর অপরাধ মনে করেন না। তারা পরিবার ও পেশাগত দায়িত্ব পালন করেই পরকীয়ায় জড়ান। তরুণ প্রজন্মও এসব সম্পর্ককে এক ধরনের বন্ধুত্ব এবং মানসিক ভরসা হিসেবে দেখে। এখানে শুধুমাত্র শারীরিক সম্পর্কই নয়, মানসিক ঘনিষ্ঠতাও গুরুত্বপূর্ণ।
একদিকে অনেকেই পরকীয়ায় শুধু যৌনসুখের জন্য জড়ান। আবার অন্যদিকে, দাম্পত্য জীবনের একঘেয়েমি কাটাতে এবং মানসিক দূরত্বের কারণে অনেকে পরকীয়ায় আশ্রয় নেন। শারীরিক ও মানসিক উভয় অভাবই এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে।
থাইল্যান্ডের পর এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ডেনমার্ক। স্ক্যান্ডিনেভিয়ার এই দেশটিতে প্রায় ৪৬ শতাংশ মানুষ পরকীয়ায় লিপ্ত বলে জানা গেছে। তৃতীয় স্থানে রয়েছে জার্মানি, যেখানে প্রায় ৪৫ শতাংশ বিবাহিত নাগরিক পরকীয়ায় জড়িত।
এছাড়াও তালিকায় রয়েছে ইতালি, ফ্রান্স, নরওয়ে, বেলজিয়াম, স্পেন, যুক্তরাজ্য, কানাডা, গ্রিস, ফিনল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ, আমেরিকা।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ, পাকস্তিান ও ভারত এই তালিকায় নেই। তবে একটি ডেটিং অ্যাপের সমীক্ষায় দেখা গেছে, ভারতের তরুণ প্রজন্ম দিন দিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরও দুঃসাহসী হচ্ছে। বিশেষ করে টায়ার-২ ও ছোট শহরগুলোতে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের চাহিদা বাড়ছে।
সাধারণ ধারণা হলো, সঙ্গীকে ঠকানো মানে পুরোদস্তুর সম্পর্কের বাইরে যাওয়া একসঙ্গে দেখা করা, সময় কাটানো। আবার অনেকের মতে, পরকীয়া হচ্ছে ঘর বাঁচিয়ে নিজের মানসিক শান্তি বজায় রাখার উপায়। অনেক দেশে এখন এটি অপরাধ নয়, তবে বিবাহবিচ্ছেদের কারণ হতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :