ফিলিস্তিনের গাজায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ত্রাণ নিচ্ছেন ক্ষুধার্থ মানুষ। উপত্যকাটিতে পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, এক বস্তা আটার জন্য চলে যেতে পারে নিজের জীবনও। রোববার (৩ আগস্ট) হামজা জোদা নামে এক ব্যক্তি সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে বলেছেন, ‘আমি আটার বস্তা আসার জন্য অপেক্ষা করছি। কিন্তু আমাদের মাত্র বলা হলো আটা শেষ হয়ে গেছে। আমাদের বাড়িতে চলে যেতে বলেছে। আমাদের কোনো উপায় নেই, ফিরে যেতে হয়েছে।’ তিনি গাজার মোরাগ এলাকায় ত্রাণের জন্য গিয়েছিলেন।
গাজার এ বাসিন্দা আরও বলেন, ‘এটি একটি অপরাধ, ভয়াবহ। এটি জীবনমৃত্যুর বিষয়। পরিস্থিতি অনেক বেশি ভয়ঙ্কর। এখানে ইসরায়েলিদের ট্যাংক অবস্থান করছে। সার্বক্ষণিক গোলাগুলি হচ্ছে।’
নিদাল কাসেমী নামে অপর এক ব্যক্তি শাতি শরণার্থী ক্যাম্প থেকে এসেছেন ত্রাণের আসায়। তিনি বলেন, ‘আমি এখানে কিছু ত্রাণ আর খাবারের আশায় এসেছি। বাজারে যেসব খাবার আছে সেগুলোর দাম অনেক বেশি, সাধ্যের বাইরে। আমরা সেই শাতি ক্যাম্প থেকে এসেছি। শুধু অল্প সাহায্যের জন্য। শুধু আমাদের ক্ষুধা নিবারণের জন্য।’
ত্রাণ নিতে এসে অনেক মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন উল্লেখ করে নিদাল কাসেমী বলেন, ‘ত্রাণকেন্দ্রে ইসরায়েলিদের ট্যাংক মানুষকে ঘিরে রাখে, মাঝে মাঝে গুলি করে। প্রতিদিন এখানে মানুষ মারা যাচ্ছে। কখনো ৬ জন বা কখনো ১০ জন।’
এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে , সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে ৬৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও ৫১১ জনের বেশি আহত হয়েছেন। ২৭ জুলাই থেকে ইসরায়েলের কৌশলগত যুদ্ধবিরতির মধ্যে ত্রাণ নিতে গিয়ে সাত দিনে নিহত হয়েছে কমপক্ষে ২৫০ জনের বেশি । চলতি বছরের ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত সহায়তা নিতে গিয়ে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪৮৭ এবং আহত হয়েছেন ১০ হাজার ৫৭৮ জনেরও বেশি।
সংবাদ মাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদন বলছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের টানা হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৬০ হাজার ৮৩৯ জনে পৌঁছেছে। এ ছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে মোট আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৫৮৮।
আপনার মতামত লিখুন :