ইউরোপে আগামী বছরের মধ্যে সশস্ত্র সংঘাতের আশঙ্কায় ফ্রান্সের হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্থানীয় গণমাধ্যম ল্য কানার্দ অঁশেনে’র প্রকাশিত এক চিঠিতে এ তথ্য উঠে এসেছে। সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেন্ডেন্ট এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে ফ্রান্সে ‘বড় ধরনের সামরিক সম্পৃক্ততার’ আশঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় ১০ থেকে ১৮০ দিনের মধ্যে হাসপাতালে ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার আহত সেনা আসতে পারেন।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে বড় ধরনের সংঘাতের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সহায়তার ধরনগুলো আগে থেকেই নির্ধারণ করা প্রয়োজন।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ক্যাথরিন ভাত্রিন স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল বিএফএমটিভি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চিঠির বিষয়ে বলেন, ‘এটি প্রস্তুতিরই অংশ—যেমন কৌশলগত মজুদ বা মহামারির সময়কার ব্যবস্থা। কোভিড-১৯-এর সময় দেশটি প্রস্তুত না থাকায় যে সমালোচনা হয়েছিল, তা ভুলে যাওয়া উচিত নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্বই হলো সম্ভাব্য সংকটের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া।’
১৮ জুলাই ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, আসন্ন মাসগুলোতে বড় ধরনের সংঘাতের ক্ষেত্রে ফ্রান্স সুরক্ষিত অঞ্চলের ঘাঁটি হিসেবে কাজ করতে পারে। এজন্য সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দরের কাছে চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপনের কথাও ভাবা হচ্ছে, যাতে বিদেশি সেনাদের নিজ নিজ দেশে পাঠানো যায়।
কয়েক মাস আগে ফরাসি সরকার ঘোষণা দিয়েছিল, প্রতিটি পরিবারকে ২০ পৃষ্ঠার একটি ‘সারভাইভাল ম্যানুয়াল’ পাঠানো হবে। এতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, স্বাস্থ্য সংকট কিংবা সশস্ত্র সংঘাতের মতো ‘আসন্ন হুমকির’ প্রস্তুতি নিয়ে নির্দেশনা দেওয়া হবে।
ম্যানুয়ালে অন্তত ছয় লিটার বোতলজাত পানি, ১০ ক্যান খাবার, টর্চলাইট, ব্যাটারি, স্যালাইন ও প্যারাসিটামলসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এমনকি পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটলে দরজা-জানালা বন্ধ রাখার কথাও বলা হয়েছে।
গত জুলাইয়ে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বাড়ানোর পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। ২০১৭ সালে প্রতিরক্ষা বাজেট ছিল ৩২ বিলিয়ন ইউরো। তা ২০২৭ সালের মধ্যে দ্বিগুণ হয়ে ৬৪ বিলিয়ন ইউরোতে পৌঁছাবে।
অতিরিক্তভাবে আগামী বছর আরও ৩.৫ বিলিয়ন ইউরো এবং ২০২৭ সালে আরও ৩ বিলিয়ন ইউরো বরাদ্দ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ম্যাক্রোঁ।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন