সর্বপ্রথম লন্ডন থেকে খবর পাওয়া গেছে, ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর সামরিক হেফাজতে থাকা মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেতা অং সান সু চি গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকতে পারেন। সু চির ছেলে কিম অ্যারিস শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) জানান, ‘নিষ্ঠুর ও হুমকিপূর্ণ’ হেফাজতে থাকা তার মা বেঁচে আছেন কি না, সেটিও যাচাই করার কোনো উপায় নেই।
অ্যারিস বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ৮০ বছর বয়সী সু চি প্রায় এক মাস আগে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেখানোর জন্য অনুরোধ করেছিলেন। তবে জান্তা সরকার এই অনুরোধ মঞ্জুর করেছে কি না, তা নিশ্চিত নয়। তিনি বলেন, ‘যথাযথ চিকিৎসা পরীক্ষা ছাড়া তার হার্টের অবস্থা জানা অসম্ভব। আমি অত্যন্ত চিন্তিত। তিনি বেঁচে আছেন কি না, তা যাচাই করার কোনো উপায় নেই।’
তিনি আরও জানান, নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী সু চি হাড় এবং মাড়ির সমস্যায় ভুগছেন এবং সম্ভবত মার্চ মাসে এক ভূমিকম্পে তিনি আহত হয়েছিলেন। অ্যারিস ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্টে সু চি এবং মিয়ানমারের সকল রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন।
মিয়ানমারের সামরিক-সমর্থিত সরকারের মুখপাত্র রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেননি। তথ্য মন্ত্রণালয়ও প্রশ্নের তাৎক্ষণিক কোনো উত্তর দেয়নি।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর দেশজুড়ে ব্যাপক গণবিক্ষোভ শুরু হয়, যা নৃশংসভাবে দমন করা হয় এবং এর ফলে সশস্ত্র বিদ্রোহের সূত্রপাত হয়। সু চি উস্কানি, দুর্নীতি এবং নির্বাচনী জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অপরাধের জন্য ২৭ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন।
অভ্যুত্থানের কয়েক মাস পর ২০২১ সালের মে মাসে সর্বশেষ তাকে জনসমক্ষে দেখা গেছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ছবিতে তিনি কাঠগড়ায় বসে থাকতেন। পশ্চিমা দেশ ও মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো ধারাবাহিকভাবে তার মুক্তির আহ্বান জানাচ্ছে।
সেনা-সমর্থিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী ডিসেম্বরের শেষের দিকে নতুন নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। এটি অভ্যুত্থানের পর প্রথম নির্বাচন।
রয়টার্স জানিয়েছে, সু চির দল এবং জান্তা-বিরোধী সশস্ত্র সংগঠনগুলো হয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ বয়কট করেছে বা বিরত রাখা হয়েছে। শুধুমাত্র সামরিক-সমর্থিত ও অনুমোদিত দলগুলো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। পশ্চিমা দেশগুলো এই ভোটকে সেনা ক্ষমতা সুদৃঢ় করার পদক্ষেপ হিসেবে সমালোচনা করেছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন