মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আরব ও মুসলিম নেতাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর দখল করতে দেবেন না। অন্যদিকে আরব ও মুসলিম নেতারা গাজায় যুদ্ধ বন্ধ এবং তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
পলিটিকোর ছয়টি সূত্রের বরাত দিয়ে জানা গেছে, ট্রাম্প এই বিষয়ে অটল ছিলেন ও পশ্চিম তীর দখল হবে না এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে সূত্রগুলো বলছে, ট্রাম্পের আশ্বাস সত্ত্বেও গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরভাবে ফলপ্রসূ হয়নি।
দুটি সূত্র আরও জানিয়েছে, ট্রাম্প ও তার দল যুদ্ধের সমাপ্তি এবং যুদ্ধোত্তর সময়ের প্রশাসন ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত পরিকল্পনার একটি নথি উপস্থাপন করেছেন। এতে সংঘাতের পরে শাসন ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা রক্ষার সঙ্গে সংযুক্তি রোধের প্রতিশ্রুতিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ফাঁকে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে আরব ও মুসলিম নেতারা গাজায় যুদ্ধ বন্ধ এবং তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
আরব লীগ ও ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)-এর পক্ষ থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে নেতারা জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি অবশ্যই জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করবে এবং ছিটমহলে পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেবে। তারা এটিকে ‘ন্যায়সংগত ও টেকসই শান্তির’ প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
নেতারা গাজার জনসংখ্যার জোরপূর্বক স্থানান্তরের বিরোধিতা পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং পালিয়ে আসা মানুষদের ফিরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা গাজার ‘অসহনীয়’ পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন, যেখানে মানবিক বিপর্যয়, মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং বিপজ্জনক আঞ্চলিক প্রভাব লক্ষ করা গেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, নেতারা যুদ্ধের অবসান ও শান্তির সম্ভাবনা উন্মোচনে ট্রাম্পের ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরে তার সঙ্গে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তারা পশ্চিম তীরে স্থায়ী শান্তি বজায় রাখার জন্য একটি স্থিতিশীল পরিকল্পনার আহ্বান জানিয়েছে এবং জেরুজালেমের পবিত্র স্থানগুলো রক্ষা ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সংস্কার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার বিষয়েও জোর দিয়েছেন।
এর পাশাপাশি তারা আরব লীগ ও ওআইসি উদ্যোগে গাজা পুনর্নির্মাণের জন্য বিস্তৃত পরিকল্পনার খসড়া তৈরিতে সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়গুলো বিবেচনা করা হয়েছে। অংশগ্রহণকারীরা নিশ্চিত করেছেন, এই পরিকল্পনার সফলতা নিশ্চিত করতে এবং ছিটমহলে ফিলিস্তিনিদের স্বাভাবিক জীবন পুনরুদ্ধারে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ট্রাম্পের উদ্যোগে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে আটটি আরব রাষ্ট্র এবং অন্যান্য ওআইসি সদস্যদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র: হারেৎজ, মিডল ইস্ট আই, আনাদোলু
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন