মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে ‘আব্রাহাম চুক্তি’র মাধ্যমে আমরা যে পথে এগিয়ে চলেছি, সেই যাত্রা আরও এগিয়ে নিতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। আপনার নেতৃত্বেই আমরা এই অঞ্চলের আরব দেশগুলোর পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের বাইরের মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গেও নতুন শান্তিচুক্তি করতে পারব। ইসরায়েলি পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) নেসেটে ভাষণ দেওয়া সময় তার পাশে বসা ছিলেন ট্রাম্প। বক্তব্যের শুরুতে গাজা যুদ্ধে নিহত ইসরায়েলি সৈন্যদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিবি নেতানিয়াহু। এরপর তিনি জিম্মি বিনিময়ের জন্য যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং কৃতজ্ঞতা জানান।
নেতানিয়াহু বলেন, ট্রাম্পের নাম ‘আমাদের ইতিহাসে’ যেমন খোদাই হয়ে থাকবে, তেমনি ‘মানবজাতির ইতিহাসেও’ চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে। আমরা জানি আমাদের বাকি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে তোমাদের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘এই মুহূর্তটির জন্য আমরা কতদিন ধরে অপেক্ষা করেছি; আজ সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। সমগ্র জাতির পক্ষ থেকে আমি আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আপনার (ট্রাম্পের) নেতৃত্বে আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে আমরা যে পথে এগিয়ে চলেছি, সেই যাত্রা আরও এগিয়ে নিতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। আপনার নেতৃত্বেই আমরা এই অঞ্চলের আরব দেশগুলোর পাশাপাশি, মধ্যপ্রাচ্যের বাইরের মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গেও নতুন শান্তিচুক্তি করতে পারব।’
নাম উল্লেখ না করেই হামাসকে ইঙ্গিত করে নেতানিয়াহু অভিযোগ করেন, বেশ কয়েকটি দেশের সরকার ‘হামাসের মিথ্যা প্রচারণায়’ প্রভাবিত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ক্রমশ আরও বেশি সরকার নিজেদের দেশের ইহুদি-বিরোধী জনতার চাপে নতি স্বীকার করছে। তারা স্পষ্টভাবে ইসরায়েলের বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। এসব সরকার আমাদের হামাসের দাবির কাছে আত্মসমর্পণ করতে এবং অবিলম্বে গাজা ত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে।’
নেতানিয়াহু আরও বলেন, ‘তারা চায় আমরা যুদ্ধ শেষ করি। হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের কোনো নিশ্চয়তা ছাড়াই, গাজাকে সামরিকীকরণমুক্ত করার প্রতিশ্রুতি ছাড়াই।’
ট্রাম্পের ‘প্রধান নেতৃত্ব’ জিম্মি-বন্দি ও যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য প্রায় সমগ্র বিশ্বের সমর্থন অর্জন করেছিল। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটি প্রস্তাব যা আমাদের সব জিম্মিকে ঘরে ফিরিয়ে আনবে; একটি প্রস্তাব যা আমাদের সকল লক্ষ্য অর্জনের মধ্য দিয়ে যুদ্ধের সমাপ্তি নিশ্চিত করবে; একটি প্রস্তাব যা আমাদের অঞ্চলে এবং এর বাইরেও শান্তির ঐতিহাসিক সম্প্রসারণের সূচনা করবে।
তিনি নেসেটে বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ইসরায়েল রাষ্ট্রের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ ও নির্ভরযোগ্য বন্ধু। কোনো আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ইসরায়েলের জন্য এত কিছু করেননি। যেমনটা আমি ওয়াশিংটনেও বলেছিলাম, এই তুলনায় অন্য কেউ এমনকি কাছাকাছিও আসে না।’
ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনার প্রসঙ্গে নেতানিয়াহু বলেন, এটি এমন এক প্রস্তাব যা ‘আমাদের অঞ্চলে শান্তির ঐতিহাসিক সম্প্রসারণের দ্বার খুলে দেবে’। মি. প্রেসিডেন্ট, আপনি এই শান্তির প্রতিশ্রুতিবদ্ধ; আমি এই শান্তির প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রেসিডেন্ট ও আমরা একসঙ্গে এই শান্তি প্রতিষ্ঠা করব।
সূত্র: আল-জাজিরা, দ্য গার্ডিয়ান, টাইমস অব ইসরায়েল
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন