রবিবার, ২৯ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


দ্য গার্ডিয়ান

প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০২৫, ০৮:৩৬ পিএম

রুয়ান্ডা-কঙ্গো চুক্তি: খনিজ সম্পদের দিকে নজর দিচ্ছেন ট্রাম্প

দ্য গার্ডিয়ান

প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০২৫, ০৮:৩৬ পিএম

২০২১ সালে শুরু হওয়া এম২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর আক্রমণাত্মক কর্মকাণ্ড চলতি বছরের শুরুতে আরও তীব্র আকার ধারণ করে। ছবি- সংগৃহীত

২০২১ সালে শুরু হওয়া এম২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর আক্রমণাত্মক কর্মকাণ্ড চলতি বছরের শুরুতে আরও তীব্র আকার ধারণ করে। ছবি- সংগৃহীত

যুদ্ধ বন্ধে রুয়ান্ডা ও গণতান্ত্রিক কঙ্গোর মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে ওয়াশিংটনে। তবে এই চুক্তির প্রকৃত অর্থ কী এবং এতে কারা সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে, সে নিয়ে এখনও প্রশ্ন রয়েছে। এ সুযোগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তির মাধ্যমে লাভজনক খনিজ সম্পদের অধিকার পেয়েছে।

ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর উপস্থিতিতে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ২০২৪ সালের পুরোনো এক চুক্তি বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেন। এই চুক্তি অনুযায়ী, ৯০ দিনের মধ্যে পূর্ব কঙ্গো থেকে রুয়ান্ডার সেনা প্রত্যাহার করার কথা রয়েছে।

এছাড়া, চুক্তিতে বলা হয়েছে, রুয়ান্ডা ও কঙ্গো আগামী ৯০ দিনের মধ্যে একটি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক একীভবনের কাঠামো চালু করবে, যাতে দুই দেশের মধ্যে আরও ঘনিষ্ঠ বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলা যায়।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, এখনও অনেক কাজ বাকি থাকলেও এই শান্তি চুক্তি মানুষকে ‘একটা ভালো জীবনের স্বপ্ন ও আশা’ দেখাবে।

এই চুক্তি কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হয়েছে। লক্ষ্য হলো রুয়ান্ডায় ১৯৯৪ সালের গণহত্যার পর থেকে চলা দীর্ঘ সংঘাতের অবসান ঘটানো।

চলতি বছরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়, যখন এম২৩ নামের এক বিদ্রোহী গোষ্ঠী পূর্ব কঙ্গোতে সেনাবাহিনী ও তাদের মিত্রদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের হামলা চালায়। এতে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয় এবং লাখ লাখ মানুষ ঘরছাড়া হয়।

চুক্তি স্বাক্ষরের আগে ট্রাম্প বলেন, ‘তারা বহু বছর ধরে এই সংঘাত চালিয়ে গেছে, চাপাতি দিয়ে হত্যা করেছে, এটি ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর যুদ্ধগুলোর একটি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই চুক্তির মাধ্যমে আমরা কঙ্গো থেকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অনেক খনিজ অধিকার পাচ্ছি। কঙ্গোর নেতারা এখানে এসে সম্মানিত বোধ করছেন, তারা কখনো ভাবেননি এই সুযোগ আসবে।’

চুক্তি স্বাক্ষরের সময় কঙ্গোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী থেরেস কাইকওয়াম্বা ওয়াগনার বলেন, ‘শান্তি অবশ্যই পছন্দনীয়, কিন্তু আন্তর্জাতিক আইন মানা, মানবাধিকারের সুরক্ষা এবং রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করাও আমাদের দায়িত্ব।’

খনিজে ভরপুর পূর্ব কঙ্গোতে এম২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠী শতাধিক সশস্ত্র সংগঠনের একটি। এই গোষ্ঠীটির নেতৃত্বে রয়েছে টুটসি সম্প্রদায়। তারা দাবি করে, তাদের উদ্দেশ্য হলো সংখ্যালঘু টুটসিদের রক্ষা করা, বিশেষ করে ১৯৯৪ সালের রুয়ান্ডার গণহত্যার পর যারা ডিআর কঙ্গোতে পালিয়ে আসা হুতু বিদ্রোহীদের হুমকিতে আছে।

কঙ্গো রিপাবলিকান​

রুয়ান্ডা সরাসরি বিদ্রোহীদের সমর্থন দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে। তবে তারা দাবি করেছে, ‘এফডিএলআর’ নামের আরেকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে ভেঙে দিতে হবে। এই গোষ্ঠীটি মূলত জাতিগত হুতুদের তৈরি, যারা ১৯৯৪ সালের রুয়ান্ডার গণহত্যায় টুটসিদের হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল।

শুক্রবার (২৭ জুন) স্বাক্ষরিত চুক্তিতে এফডিএলআর-কে ‘নিরপেক্ষ করার’ আহ্বান জানানো হয়েছে।

চুক্তি স্বাক্ষরের আগে রুয়ান্ডা, কঙ্গো এবং যুক্তরাষ্ট্র এক যৌথ বিবৃতি দেয়। তারা জানায়, এই চুক্তিতে আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো, শত্রুতা বন্ধ করা এবং সব অ-রাষ্ট্রীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীকে নিরস্ত্রীকরণের কথা বলা হয়েছে।

বিবৃতিতে ভবিষ্যতে ওয়াশিংটনে একটি শীর্ষ বৈঠকের কথাও বলা হয়েছে, যেখানে অংশ নেবেন ট্রাম্প, রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামে এবং কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স শিসেকেদি। এছাড়াও দুই দেশের মধ্যে একটি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক একীকরণ কাঠামো চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

চুক্তিটি নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠেছে, বিশেষ করে এতে যে অর্থনৈতিক দিকটি রয়েছে তা নিয়ে। ট্রাম্প প্রশাসন পূর্ব কঙ্গোর প্রচুর খনিজ সম্পদের ওপর নজর রাখছে। এই অঞ্চলে রয়েছে ট্যানটালাম, সোনা, কোবাল্ট, তামা এবং লিথিয়ামের বিশাল মজুদ।

চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র এসব গুরুত্বপূর্ণ খনিজে সরাসরি প্রবেশাধিকার পেতে পারে। চুক্তির উদ্দেশ্য হলো পশ্চিমা বিনিয়োগ টেনে আনা, তবে এতে কারা লাভবান হবে তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

রুয়ান্ডা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিতাড়িত অভিবাসীদের বিষয়ে আলাপ করেও নিজ প্রভাব বাড়াতে চাইছে।

একই সঙ্গে, কঙ্গোর বিখ্যাত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ও ২০১৮ সালের শান্তি নোবেলজয়ী ডেনিস মুকওয়েগে এই মধ্যস্থতাকে ‘অস্বচ্ছ’ বলে সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, এতে ন্যায়বিচার, ক্ষতিপূরণ বা রুয়ান্ডার আগ্রাসনের স্বীকৃতির বিষয়গুলো নেই।

তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, ‘এই চুক্তি যদি এখনকার মতোই থাকে, তবে এটি কঙ্গোবাসীর ওপর হামলার পুরস্কার, প্রাকৃতিক সম্পদের লুটপাটকে বৈধতা দেওয়া এবং বিচার ছাড়া এক ধরণের ভঙ্গুর ও অস্থায়ী শান্তি চাপিয়ে দেওয়ার মতো হবে। এতে ভুক্তভোগীরা নিজেদের জাতীয় মর্যাদা হারানোর ঝুঁকিতে পড়বে।’

Link copied!