ঢাকা রবিবার, ০৮ জুন, ২০২৫

উত্তর কোরিয়ায় হঠাৎ ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন, কী ঘটছে সেখানে?

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ৭, ২০২৫, ০৫:২৭ পিএম
ছবি- সংগৃহীত

উত্তর কোরিয়ায় হঠাৎ করেই বড় ধরনের ইন্টারনেট বিঘ্ন ঘটেছে,তবে যার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি ইন্টারনেট পর্যবেক্ষণ সংস্থা বলছে, এটা কোনো সাইবার হামলার ফল নয়।

বরং অভ্যন্তরীণ কোনো কারিগরি বা নীতিগত কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। ফলে দেশটিতে বাস্তবিক কী ঘটছে, তা নিয়ে বাড়ছে রহস্য ও উদ্বেগ।

গবেষক ও পর্যবেক্ষক জুনাদ আলী শনিবার (৭ জুন) জানান, উত্তর কোরিয়ার ইন্টারনেট অবকাঠামো বর্তমানে বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক ট্র্যাকিং সিস্টেমে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে না। এতে বোঝা যাচ্ছে, চীন ও রাশিয়ার সার্ভারের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকা সব রুটে বিঘ্ন ঘটেছে।

তিনি আরও বলেন, "এটি পরিকল্পিত ব্ল্যাকআউট, নাকি কোনো দুর্ঘটনা—তা নিশ্চিত নয়। তবে সাইবার হামলার চিহ্ন নেই, এটি অভ্যন্তরীণ কারণেই হয়ে থাকতে পারে।"

উল্লেখ্য, উত্তর কোরিয়া বিশ্বদৃশ্যপটে কিছু সরকারি ওয়েবসাইট পরিচালনা করে, যেমন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সরকারি বার্তা সংস্থা কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ)। শনিবার সকালে এই ওয়েবসাইটগুলোতেও প্রবেশ করা যাচ্ছিল না, জানিয়েছে আল জাজিরা।

উত্তর কোরিয়ার প্রায় সব আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট সংযোগ চীনের মাধ্যমে চলে বলে ধারণা করা হয়। তবে দেশটির প্রায় ২৫ মিলিয়ন জনসংখ্যার মধ্যে মাত্র এক শতাংশেরও কম মানুষ সরাসরি বৈশ্বিক ইন্টারনেটে প্রবেশাধিকার পান। বাকিরা কোয়াংমিয়ং নামে অভ্যন্তরীণ, সরকার-নিয়ন্ত্রিত ইনট্রানেট ব্যবহার করেন।

উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক হ্যাকার আলেজান্দ্রো কাসেরেস উত্তর কোরিয়ার সব পাবলিক ওয়েবসাইটে ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়াল অব সার্ভিস (ডিডিওএস) হামলা চালিয়ে এক সপ্তাহের বেশি সময় বন্ধ করে রেখেছিলেন।

অন্যদিকে, বিশ্বব্যাপী সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছেন, উত্তর কোরিয়া রাষ্ট্রীয়ভাবে হ্যাকার বাহিনী পরিচালনা করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের অভিযোগ অনুযায়ী, দেশটি সাইবার চুরির মাধ্যমে কোটি কোটি ডলার মূল্যের সম্পদ হাতিয়ে নিচ্ছে।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ব্লকচেইন বিশ্লেষণ প্রতিষ্ঠান চেইনালাইসিস প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে উত্তর কোরিয়ান হ্যাকাররা ৪৭টি সাইবার হামলার মাধ্যমে প্রায় ১.৩৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ক্রিপ্টোকারেন্সি চুরি করেছে—যা একটি নতুন রেকর্ড।