ঢাকা রবিবার, ২৯ জুন, ২০২৫

চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নতুন ছক তাইওয়ান-আমেরিকার

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০২৫, ১১:১৭ পিএম
ন্যাশনাল অ্যাডভান্সড সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল সিস্টেম। ছবি- সংগৃহীত

মার্কিন সামরিক বাহিনী তাইওয়ানকে পরামর্শ দিয়েছে, তারা যেন আকাশে নজরদারির প্ল্যাটফর্ম ও হেলিকপ্টার কেনার চেয়ে বিমান ও ভূমি থেকে আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র কেনাকাটায় অগ্রাধিকার দেয়। ওয়াশিংটনের এই তদারকি মূলত অদূর ভবিষ্যতে চীনের থেকে আসা সকল হুমকি মোকাবেলায় তাইওয়ানকে প্রস্তুত করার অংশ।

তাইওয়ানের সামরিক বাহিনীর একটি সূত্রের বরাত দিয়ে তাইপেই টাইমস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র চাইছে তাইওয়ান তার প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ‘অসম যুদ্ধ কৌশল’ অনুযায়ী গড়ে তুলুক, যাতে চীনের বড় ও সুসংগঠিত বাহিনীর মোকাবেলায় তুলনামূলকভাবে ছোট কিন্তু কার্যকর প্রতিরক্ষা গড়ে তোলা যায়। এই লক্ষ্যে তাইওয়ানকে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্রের পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি আরও উন্নত সংস্করণ গ্রহণে উৎসাহিত করা হয়েছে।

তাছাড়া তাইওয়ানকে মানববিহীন আকাশযান (ড্রোন) এবং জাহাজ (আনম্যানড সারফেস ভেসেল) কেনার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

তাইওয়ানের সামরিক বাজেট খসড়ায় এই সুপারিশগুলো বিবেচনা করা হয়েছে। আগস্টে এই বিশেষ বাজেট প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে, যার সম্ভাব্য পরিমাণ ৩০০ থেকে ৫০০ বিলিয়ন নিউ তাইওয়ান ডলার (প্রায় ১০ দশমিক ২৮ থেকে ১৭ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলার)।

এই বাজেটের আওতায় তাইওয়ানের কমান্ড ও কন্ট্রোল ব্যবস্থা লিঙ্ক-২২ স্ট্যান্ডার্ডে উন্নীত করা হবে, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক যোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্গে তা যুক্ত হতে পারবে।

তাইওয়ান এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনটি ন্যাশনাল অ্যাডভান্সড সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল সিস্টেম (এনএএসএএমএস) কিনেছে। এই সিস্টেমের প্রথম চালান চলতি বছরই পাওয়ার কথা। মার্কিন পক্ষ চাইছে, তাইওয়ান এনএএসএএমএস-এর আরও ইউনিট কিনুক।

এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে হারপুন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাও সরবরাহ করছে। আরজিএম-৮৪এল-৪ ব্লক টু (ইউ) মডেলের পাঁচটি লঞ্চার ট্রাক এবং একটি রাডার ট্রাক ইতোমধ্যে পাঠানো হয়েছে।

এই হারপুন সিস্টেম তিন ধাপে সরবরাহ করা হবে। প্রথম ধাপে ছিল প্রশিক্ষণ সিমুলেটর ও প্রশিক্ষক দল, দ্বিতীয় ধাপে আছে উৎক্ষেপণ ট্রাক ও রাডার সরবরাহ, এবং শেষ ধাপে থাকবে ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ।

২০২৩ সালে তাইওয়ান মোট ১০০ সেট লঞ্চার ও ৪০০টি ক্ষেপণাস্ত্র অর্ডার করেছিল। এর মধ্যে ৩২টি সেট ২০২৬ সালের মধ্যে এবং বাকি ৬৮টি সেট ২০২৮ সালের মধ্যে সরবরাহ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। নির্ধারিত সময়সূচির মধ্যেই এসব সরবরাহ চলছে।

সামরিক বাহিনীর মতে, ধাপে ধাপে সরবরাহের ফলে সৈন্যরা প্রযুক্তির সঙ্গে ভালোভাবে পরিচিত হতে পারছে, এবং সিস্টেম হাতে পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে তা যুদ্ধ ব্যবস্থায় যুক্ত করা সম্ভব হবে।

আগামী বছরের জানুয়ারিতে ‘লিটোরাল কমব্যাট কমান্ড’ নামে একটি নতুন ইউনিট গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে। তাই ওই ইউনিট গঠনের আগেই ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ নিশ্চিত করতে চেষ্টা চলছে, এবং আশা করা হচ্ছে এই বছরের মধ্যেই কিছু চালান পৌঁছে যাবে।