ঢাকা বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ধীরগতির বিলাসবহুল ট্রেনে চীনে পৌঁছালেন কিম

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫, ০৬:৩৮ পিএম
বিলাসবহুল সাঁজোয়া ট্রেনে বেইজিংয়ে পৌঁছেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। ছবি- সংগৃহীত

বিলাসবহুল সাঁজোয়া ট্রেনে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে পৌঁছেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। বুধবার চীনের ‘ভিক্টরি ডে’ সামরিক কুচকাওয়াজে তিনি অংশ নেবেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।

এ কুচকাওয়াজেই প্রথমবারের মতো বহুপক্ষীয় বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছেন কিম। সেখানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ আরও অনেক বিশ্বনেতার সঙ্গে এক মঞ্চে দেখা যাবে তাকে। সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এসব খবর জানানো হয়েছে।

সাঁজোয়া ট্রেনে যাত্রা

সোমবার পিয়ংইয়ং থেকে যাত্রা শুরু করে মঙ্গলবার চীনে প্রবেশ করেন কিম। তিনি পৌঁছান নিজের বিখ্যাত সাঁজোয়া ট্রেনে, যেটিতে রেস্তোরাঁ থেকে শুরু করে ফ্রেঞ্চ ওয়াইন ও টাটকা লবস্টারের মতো খাবার পরিবেশন করা হয়। নিরাপত্তার কারণে ট্রেনটি ধীরগতিতে চলে।

কিমের এই সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ ১৯৫৯ সালের পর এটাই প্রথমবার কোনো উত্তর কোরীয় নেতা চীনের সামরিক কুচকাওয়াজে যোগ দিচ্ছেন। এ বছর তিনি ২৬ জন রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করবেন, যাদের মধ্যে মিয়ানমার, ইরান ও কিউবার নেতারাও আছেন।

এর আগে ২০১৫ সালে চীনের ‘ভিক্টরি ডে’ প্যারেডে উত্তর কোরিয়া শুধু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা চোয়ে রিয়ং-হে-কে পাঠিয়েছিল। এবার কিম নিজেই উপস্থিত থাকছেন।

ট্রেন ভ্রমণের ঐতিহ্য

কিমের বিদেশ সফরের ইতিহাস খুবই সীমিত। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি কেবল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দুবার বৈঠক করেছেন। সর্বশেষ দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭০ বছর উপলক্ষে তিনি ২০১৯ সালে বেইজিং সফর করেছিলেন।

ট্রেনে ভ্রমণের এ ঐতিহ্য শুরু করেছিলেন কিম ইল সুং। পরবর্তী সময়ে কিম জং ইলও বিমানভীতি থাকায় নিয়মিত ট্রেনে ভ্রমণ করতেন। দক্ষিণ কোরীয় গণমাধ্যম জানায়, কিম জং উনের সাঁজোয়া ট্রেনে প্রায় ৯০টি বগি রয়েছে, যাতে কনফারেন্স রুম, অডিয়েন্স চেম্বার ও শয়নকক্ষও রাখা হয়েছে।

তিয়ানআনমেন স্কয়ারে প্রদর্শনী

বুধবার তিয়ানআনমেন স্কয়ারে ৭০ মিনিটব্যাপী কুচকাওয়াজে অংশ নেবে হাজার হাজার সেনা। এটি হবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি এবং জাপানের আত্মসমর্পণের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান।

কুচকাওয়াজে চীনের বহরে যুক্ত হওয়া সর্বশেষ অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শিত হবে। এর মধ্যে শতাধিক যুদ্ধবিমান, ট্যাংক ও অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেমসহ আধুনিক সেনা কাঠামোর পূর্ণাঙ্গ প্রদর্শন হতে যাচ্ছে।

পশ্চিমা নেতারা অনুপস্থিত

ইউক্রেন আগ্রাসনের বিরোধিতার অংশ হিসেবে অধিকাংশ পশ্চিমা নেতা কুচকাওয়াজে যোগ দেবেন না। তবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রভাবশালী দেশ ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার ও ভিয়েতনামের নেতারা উপস্থিত থাকবেন, যা প্রমাণ করছে এ অঞ্চলে চীনের প্রভাব বাড়ানোর প্রচেষ্টাকে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে কেবল স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো সরাসরি উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া বুলগেরিয়া ও হাঙ্গেরি তাদের প্রতিনিধি পাঠাবে।