ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

বন্যার কারণে ইন্দোনেশিয়ায় খাদ্য-চিকিৎসার ঘাটতি দেখা দিয়েছে

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২৫, ০৯:৫৯ এএম
ইন্দোনেশিয়ার জায়া জেলায় আকস্মিক বন্যায় ধানক্ষেতের পাশে থাকা একটি মসজিদ ডুবে যায়। ছবি - সংগৃহীত

ইন্দোনেশিয়ার একাধিক প্রদেশে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের কারণে শত শত মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে খাবার, বিশুদ্ধ পানি এবং চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে। আচেহ প্রদেশের গভর্নর মুজাকির মানাফ বলেছেন, ‘সবকিছুরই অভাব রয়েছে, বিশেষ করে চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীর। আমাদের ডাক্তারের ঘাটতি মারাত্মক।’

পশ্চিম সুমাত্রা ও আচেহ প্রদেশে ধ্বংসস্তূপ সরাতে স্থানীয় সংরক্ষণ সংস্থার চারটি প্রশিক্ষিত হাতি মোতায়েন করা হয়েছে। সংস্থার প্রধান হাদি সোফিয়ান জানিয়েছেন, হাতিগুলো আটকে থাকা যানবাহন সরানো ও ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারে কার্যকর ভূমিকা পালন করছে। এই উদ্যোগের লক্ষ্য, ঘরবাড়ির কাছে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে মানুষ যেন তাদের বাড়িতে প্রবেশ করতে পারে।

ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ প্রশমন সংস্থা (বিএনপিবি) জানায়, আচেহ, উত্তর সুমাত্রা ও পশ্চিম সুমাত্রায় মোট ৯৬১ জন নিহত এবং ২৯৩ জন নিখোঁজ। এ ছাড়া, প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। পশ্চিম ইন্দোনেশিয়ার বহু এলাকায় মুষলধারে বৃষ্টি ও ভূমিধসের কারণে স্কুল, হাসপাতালসহ অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। বান্দা আচেহ শহরে পানীয় জল ও জ্বালানির জন্য দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়েছে, এবং ডিমসহ নিত্যপণ্যের দাম আকাশছোঁয়া।

বিএনপিবি আরও জানিয়েছে, পুনর্গঠনে ব্যয় হতে পারে ৫১.৮২ ট্রিলিয়ন রুপিয়া (প্রায় ৩.১ বিলিয়ন ডলার)।

শ্রীলঙ্কাতেও ঘূর্ণিঝড় ‘ডিটওয়ার’ বিধ্বংসী প্রভাব ফেলেছে। দেশটির প্রায় দুই মিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেনাবাহিনী উদ্ধার ও পুনরুদ্ধার কাজে ৩৮ হাজার ৫০০ নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েন করেছে। রাষ্ট্রপতি অনুরা কুমারা দিশানায়েকে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১ কোটি রুপি (প্রায় ৩৩ হাজার ডলার) সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন। সরকারি পক্ষের কথামতে, পুনর্গঠনের জন্য রান্নাঘরের সরঞ্জাম, বিছানাপত্র ও খাদ্য ক্রয়সহ নগদ সহায়তা প্রদান করা হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মৌসুমি বর্ষা বৃষ্টিপাত দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য স্বাভাবিক হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ ধরনের বন্যা ও ভূমিধস আরও অনিয়মিত, অপ্রত্যাশিত ও মারাত্মক হয়ে উঠছে। ফলে প্রতি বছরই বিপর্যয়ের ঝুঁকি বাড়ছে, যা স্থানীয় জনগণের জীবিকা ও অবকাঠামোর জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করছে।