চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক চাপ মোকাবিলায় আত্মরক্ষামূলক সক্ষমতা জোরদারে এগিয়ে যাচ্ছে তাইওয়ান। দেশটি চলতি মাসের শেষ দিকে নিজস্ব প্রযুক্তিতে নির্মিত আত্মঘাতী ড্রোনচালিত নৌযান (USV) বা ইউনম্যানড সার্ফেস ভেসেলের প্রথম পর্যায়ের যুদ্ধ-সক্ষমতা মূল্যায়ন শুরু করতে যাচ্ছে।
এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
সোমবার (২ জুন) তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা সূত্রের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, ‘কুয়াই চি’ নামে পরিচিত প্রকল্পের আওতায় এই ড্রোন নৌযানগুলো পরীক্ষামূলকভাবে মোতায়েন করা হবে। সবকিছু পরিকল্পনামাফিক এগোলে আগামী আগস্টে দক্ষিণ তাইওয়ানে একটি ক্ষেপণাস্ত্র মহড়ার সময় এই ড্রোনের লাইভ কমব্যাট ট্রায়াল অনুষ্ঠিত হবে।
প্রকল্পটির জন্য তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বরাদ্দ করেছে ৮০০ মিলিয়ন নিউ তাইওয়ান ডলার (প্রায় ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)। ড্রোন নৌযান তৈরির দায়িত্ব পেয়েছে তাইওয়ানের লুংতেহ শিপবিল্ডিং কোম্পানি। তাদের তিনটি আক্রমণাত্মক এবং একটি লক্ষ্যবস্তু USV তৈরির চুক্তি দেওয়া হয়েছে।
ডেভেলপার সংস্থা ন্যাশনাল চুং-শান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (NCSIST) জানিয়েছে, ২০২৫ সালের মধ্যে সব ধাপের পরীক্ষা সম্পন্ন করে ২০২৬ সাল থেকে ড্রোনের ব্যাপক উৎপাদন শুরু করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
সামরিক সূত্র বলছে, উপকূলীয় আক্রমণ প্রতিহত করতে তাইওয়ান সেনাবাহিনী প্রথম ধাপে ২০০টিরও বেশি ড্রোনচালিত নৌযান সংগ্রহ করতে চায়।
প্রকল্প-সংক্রান্ত নথিপত্র অনুযায়ী, আক্রমণাত্মক ড্রোন নৌযানটির দৈর্ঘ্য ১০ মিটারের কম, পূর্ণরূপে বোঝাই অবস্থায় ওজন হবে ৪ টনের নিচে এবং এটি মাত্র ০.৫ মিটার পানির গভীরতায় চলাচল করতে পারবে। অন্যদিকে লক্ষ্যবস্তু (target) নৌযানটির দৈর্ঘ্য হবে সর্বোচ্চ ১৭ মিটার এবং ওজন হবে ১৯ থেকে ২০ টনের মধ্যে।
সব ড্রোনেই থাকবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (AI-based) স্বয়ংক্রিয় লক্ষ্যনির্ধারণ ও পরিচালনা ব্যবস্থা, যা শত্রুপক্ষের নৌযান শনাক্ত করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আঘাত হানতে পারবে।