দীর্ঘ আড়াই বছরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে প্রথমবারের মতো বড় পরিসরে শান্তির ইঙ্গিত দিল রাশিয়া ও ইউক্রেন। উভয় দেশ ৬ হাজার করে মোট ১২ হাজার সেনার মরদেহ বিনিময়ে সম্মত হয়েছে।
একইসঙ্গে মুক্তি পাচ্ছেন গুরুতর আহত, অসুস্থ এবং অল্পবয়সী অন্তত ১ হাজারেরও বেশি যুদ্ধবন্দি সেনা।
চুক্তিটি হয়েছে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে। সেখানে মে মাস থেকে শান্তি সংলাপে বসেছে দুই দেশের সরকারি প্রতিনিধিদল। ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ, রুশ প্রতিনিধিদলের প্রধান ভ্লাদিমির মেডিনস্কি। তিনি প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহকারী এবং সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে উমেরভ জানান, আমরা ‘অল-ফর-অল’ নীতির আওতায় গুরুতর আহত, অসুস্থ ও ১৮–২৫ বছর বয়সি যুদ্ধবন্দিদের মুক্তি দিতে সম্মত হয়েছি। এই মানবিক পদক্ষেপ দুই দেশের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মেডিনস্কি বলেন, এটি যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সবচেয়ে বড় বন্দি ও মরদেহ বিনিময় চুক্তি। আত্মীয়স্বজন যেন সেনাদের মরদেহ গ্রহণ ও আহতদের স্বাগত জানাতে পারেন, সে লক্ষ্যে ২ থেকে ৩ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছি, যাতে কিয়েভ সম্মত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, এই শান্তিপূর্ণ পদক্ষেপ এসেছে এমন এক মুহূর্তে যখন যুদ্ধের উত্তাপ চরমে।
রোববার (১ জুন) ইউক্রেনীয় বাহিনী রাশিয়ার অন্তত চারটি বিমানঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালিয়ে ৪০টি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে। এটিই ছিল রাশিয়ার বিমানঘাঁটিকে লক্ষ্য করে ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় হামলা।
এই সামরিক উত্তেজনার মধ্যেও রাশিয়া-ইউক্রেনের এই মানবিক সমঝোতা আন্তর্জাতিক পরিসরে ব্যাপক গুরুত্ব পাচ্ছে।
দুই দেশের নেতারা এবং আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে। যুদ্ধাহত সেনা ও তাদের পরিবারদের জন্য এটি একটি বড় আশার বার্তা। একইসঙ্গে, যুদ্ধে অপহৃত শিশুদের ফিরিয়ে আনার বিষয়েও কাজ চলার ইঙ্গিত দিয়েছেন উভয় পক্ষ।
আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, সামরিক হামলার পরদিনই এমন মানবিক সমঝোতা যুদ্ধ পরিস্থিতিকে নতুন মাত্রা দিতে পারে। এটি শুধু যুদ্ধক্ষেত্রে নয়, কূটনৈতিক টেবিলেও শান্তির পরিসর বাড়ানোর সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
আপনার মতামত লিখুন :