রাশিয়া ও ইউক্রেনের চলমান যুদ্ধ বন্ধের কোনো লক্ষণ নেই। প্রতিদিনিই দুই দেশের লড়াই নতুন নতুন মোড় নিয়ে আরও কঠিন হচ্ছে। আন্তর্জাতিক আলোচনাও খুব একটা কাজে আসছে না। এর মধ্যেই এক চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে ইউক্রেন।
তারা বলছে, রাশিয়ার সবচেয়ে উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৫০০-এর রাডার ধ্বংস করে দিয়েছে। রুশ এস-৫০০ সর্বাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বলে বিশ্বে প্রসিদ্ধ। এদিকে এই খবরে রক্তচাপ বেড়ে গেছে ভারতের।
ইউক্রেনের সংবাদমাধ্যম দ্য কিয়েভ ইন্ডিপেন্ডেন্ট গত ৭ আগস্ট জানায়, দেশটির সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার (এইচইউআর) দাবি, ইউক্রেনের একটি ড্রোন হামলায় রাশিয়ার এস-৫০০ দূরপাল্লার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ৯৮এল৬ ‘ইয়েনিসেই’ রাডার ধ্বংস করা হয়েছে।
রাশিয়া-অধিকৃত ইউক্রেনীয় অঞ্চল ক্রিমিয়ায় একাধিক উচ্চ-মূল্যবান সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে ড্রোনগুলো। এর মধ্যে একটি দ্রুতগতির বিমান ও তিনটি রাডার স্টেশন ছিল।
এইচইউআর’র প্রকাশিত একটি ফুটেজ সাইবারবোরোশনো সংস্থা বিশ্লেষণ করেছে। যদিও প্রাথমিকভাবে এস-৪০০-এর ৯৬এল৬ রাডারে আক্রমণটি করা হয়েছিল বলে জানা গেছে। বিশ্লেকদের দাবি, এটি ৯৬এল৬ ছিল না। বরং ৯৮এল৬ ‘ইয়েনিসেই’ রাডার কোডেড, যা এস-৫০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ব্যবহৃত হয়।
ইউক্রেন কি আদৌ এস-৫০০ রাডার ধ্বংস করেছে?
যদি ইউক্রেনের দাবি সত্য হয়, তাহলে এস-৫০০ সিস্টেম এই প্রথমবার যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে। ৯৮এল৬-কে বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক মোবাইল এয়ার ডিফেন্স রাডার সিস্টেমগুলোর একটি। ৯৮এল৬ কোড নামের রাডারটি ২০২০-২১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এটি মাল্টি-এলিমেন্ট অ্যাক্টিভ ইলেকট্রনিকলি স্ক্যানড অ্যারে (এইএসএ) প্রযুক্তি দিয়ে সজ্জিত, যা খুব উচ্চ স্তরের জানকিম ক্ষমতা প্রদান করে।
এই রাডারটি ৬০০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্ব এবং ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত উচ্চতায় অ্যারোডাইনামিক এবং ব্যালিস্টিক উভয় লক্ষ্যবস্তু সনাক্ত এবং ট্র্যাক করতে সক্ষম। ফলে এস-৫০০ সিস্টেম তার অতিদূরপাল্লার ভূমি থেকে আকাশে আঘাত হানার ক্ষমতা পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারে।
বাইরে থেকে দেখলে এই রাডারের সঙ্গে এস-৫০০-এর ৯৬এল৬ই রাডারের সঙ্গে বেশ মিল রয়েছে। কিন্তু রাডারটি এক ফোর-অ্যাক্সেল এমজেডকেটি চ্যাসিসে মাউন্ট করা হয়েছে। এর ৩৬০-ডিগ্রি নজরদারি ক্ষমতার পাশাপাশি ন্যারো সেক্টর মোডে কাজ করার ক্ষমতা রয়েছে, যা ব্যালিস্টিক লক্ষ্যবস্তু সনাক্ত করতে সহায়তা করে। রাশিয়া ক্রিমিয়ায় এই রাডারটি স্থাপন করেছে, যা তারা ২০১৪ সালে দখল করেছিল।
তবে ইউক্রেনের দাবি এস-৫০০-এর রাডার ধ্বংসের ব্যাপারের এখন অবধি রাশিয়ার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
কেন ভারত চাপে?
গত ৭-৮ মে রাতে মাঝ আকাশে রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ দিয়ে পাকিস্তানের নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ধ্বংসের দাবি করেছিল ভারত। অপারেশন সিন্দুরেই অভিষেক হয়েছে এস-৪০০-এর। ভারতীয় সেনাবাহিনীও ভূয়সী প্রশংসা করেছেন এস ৪০০-এর।
অপারেশন সিন্দুরের পরেই জানা যায়, ভারত আকাশ প্রতিরক্ষায় ব্যবস্থায় আরও জোরদার করতে চেয়ে রাশিয়ার থেকে নাকি এস-৫০০ কিনতে চেয়েছে। নিশ্চিতভাবেই বিরাট সমস্যায় পড়বে। এস-৪০০-এর চেয়েও অনেক উন্নত এস-৫০০।
আপনার মতামত লিখুন :