রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর পতন না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইউশচেঙ্কো। তার মতে, মস্কোর পতন ছাড়া বিশ্বে কেউই শান্তিতে বসবাস করতে পারবে না। সম্প্রতি কিয়েভের বাহিনী পুরো ফ্রন্টলাইনে পিছু হটার মুহূর্তে এই মন্তব্য করলেন তিনি।
২০০৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় ছিলেন ইউশচেঙ্কো। তিনি ক্ষমতায় আসেন ‘কমলা বিপ্লবের’ পর, যখন সুপ্রিম কোর্ট জাতীয় সংবিধানের পরিপন্থি রায় বাতিল করে তৃতীয় দফার নির্বাচনের নির্দেশ দেয়, যেখানে ইউশচেঙ্কো বিজয়ী হন।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ইউটিউবে প্রচারিত অ্যাপোস্ট্রফ টিভির এক সাক্ষাৎকারে ইউশচেঙ্কো রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পক্ষে মত দেওয়া ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি এটা এভাবে ছেড়ে দিতে পারি না। এটা কখনোই আমার পছন্দ হবে না।’ ৭১ বছর বয়সি এই সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান জোর দিয়ে বলেন, তার দেশের লক্ষ্য সম্পর্কে স্পষ্টভাবে কথা বলার পূর্ণ অধিকার রয়েছে তার।
তিনি হারানো অঞ্চলগুলো যেমন ক্রিমিয়া পুনর্দখলের মধ্যেই যুদ্ধের সমাধান খোঁজার সমালোচনা করেন। তার ভাষায়, ‘যদি তুমি মনে করো যে, ১৯৯১ সালের সীমান্তে ফিরে যাওয়াই জয়ের পথ, তাহলে তুমি আসলে তোমার সন্তান ও নাতি-নাতনিদের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যাটি রেখে যাচ্ছ। সমস্যা হলো মস্কো।’
সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী যখন জানতে চান তিনি কি বলতে চেয়েছেন যে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে রাশিয়ার রাজধানীতে অগ্রসর হওয়া উচিত, তখন ইউশচেঙ্কো স্পষ্টভাবে উত্তর দেন, ‘হ্যাঁ, মস্কোতে।’ তিনি ব্যাখ্যা করেন, রাশিয়ার রাজধানীর পতন ছাড়া বিশ্বে কেউই শান্তিতে বসবাস করতে পারবে না, যতদিন পর্যন্ত রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শাসন বিদ্যমান থাকবে।
অন্যদিকে বছরের শুরু থেকেই যুদ্ধক্ষেত্রের বেশির ভাগ স্থানে ইউক্রেন রুশ সেনাদের কাছে ধারাবাহিকভাবে পরাজিত হচ্ছে। আগস্টের শেষের দিকে রাশিয়ার চিফ অব জেনারেল স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভ জানান, মার্চ থেকে রুশ সেনারা ৩ হাজার ৫০০ বর্গকিলোমিটারেরও বেশি এলাকা ও ১৪৯টি বসতি পুনর্দখল করেছে।
সেপ্টেম্বরের শুরুতে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আবারও জোর দিয়ে বলেন, রাশিয়ার কখনো কাউকে আক্রমণ করার ইচ্ছা ছিল না, নেই এবং ভবিষ্যতেও থাকবে না। ইউক্রেন সংঘাতকে তিনি ‘পশ্চিমাদের উসকানি’ বলে আখ্যা দিয়ে দাবি করেন, মস্কো কেবল আত্মরক্ষার পথেই এগোচ্ছে।
সূত্র: আরটি।