ঢাকা রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

রুশ হামলার ঘটনায় পোল্যান্ডে তৎপর ন্যাটোর এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৫, ০৭:৩৮ পিএম
এফ-৩৫ স্টিলথ ফাইটার। ছবি- সংগৃহীত

ইউক্রেনে রাশিয়ার বৃহৎ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনায় রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) ভোরে ন্যাটো ও পোলিশ বিমান বাহিনী সতর্ক অবস্থায় ছিল। পোলিশ অপারেশনাল কমান্ড এক্স হ্যান্ডেলে দেওয়া পোস্টে জানিয়েছে, রাশিয়ার দূরপাল্লার বিমান বাহিনীর তৎপরতার কারণে পোলিশ আকাশসীমায় যৌথ বিমান কার্যক্রম শুরু হয়।

পোলিশ ও মিত্র বাহিনীর যোদ্ধারা সতর্ক অবস্থায় জড়ো করা হয়েছিল। স্থলভিত্তিক বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং রাডারও সর্বোচ্চ প্রস্তুতিতে রাখা হয়। কমান্ড জানিয়েছে, পদক্ষেপগুলো প্রতিরোধমূলক ছিল এবং লক্ষ্য আকাশসীমা সুরক্ষা ও নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

এবিসি নিউজ জানিয়েছে, সতর্ক অবস্থায় থাকা বাহিনীর মধ্যে ডাচ এফ-৩৫ স্টিলথ ফাইটার এবং জার্মান প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত ছিল। ইউক্রেন সীমান্তের লুবলিন ও রেজেসোর আকাশসীমাও সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পর সতর্কতা শেষ হয়।

রাশিয়ার হামলার প্রধান লক্ষ্য ছিল কিয়েভ। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, জাপোরিঝিয়া, খমেলনিৎস্কি, সুমি এবং ওডেসাতেও হামলা চালানো হয়েছে। হামলা ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় স্থায়ী হয়েছে।

ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া ৫৯৩টি ড্রোন এবং ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। প্রতিরক্ষা বাহিনী ৫৬৬টি ড্রোন এবং ৪৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে। পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ৩১টি ড্রোন আঘাত হানেছে ১৬টি স্থানে।

কিয়েভে কমপক্ষে চারজন নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে একটি ১২ বছর বয়সী মেয়ে। অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছে। ১৫টিরও বেশি স্থানে ক্ষতি হয়েছে। বহুতল আবাসিক ভবনেও হামলা হয়েছে।

পোলিশ আকাশে ডাচ এফ-৩৫ স্টিলথ ফাইটার। ছবি- সংগৃহীত

সোলোমিয়ানস্কি জেলায় একটি পাঁচতলা অ্যাপার্টমেন্ট ধ্বংস হয়েছে এবং আগুন লেগেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একটি রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা কেন্দ্র, গুদাম, ব্যক্তিগত বাড়ি, গাড়ি এবং একটি শিশু শিক্ষা কেন্দ্র।

জাপোরিঝিয়ায় রাশিয়ার হামলায় কমপক্ষে ৩১ জন আহত হয়েছে, তাদের মধ্যে তিন শিশু রয়েছে। শহরে বহুতল ভবন ও অন্যান্য স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে। এই শহরটি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে মাত্র ১৬ মাইল দূরে অবস্থিত এবং ৭ লাখ ১০ হাজারের বেশি লোক বাস করে।

ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইহোর ক্লাইমেনকো বলেছেন, সারাদেশে হামলায় কমপক্ষে ৭০ জন আহত হয়েছে।

জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার আক্রমণ ‘কাপুরুষোচিত’ এবং এটিই তাদের আসল অবস্থান প্রকাশ করে। তিনি আরও বলেছেন, মস্কো যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায় এবং আন্তর্জাতিকভাবে কঠোর চাপের মুখোমুখি হওয়া উচিত। জেলেনস্কি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রাশিয়ার জ্বালানি রপ্তানি শৃঙ্খল বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।

কাউন্টার-ডিসইনফরমেশন সেন্টারের প্রধান আন্দ্রি কোভালেঙ্কো বলেছেন, রাতটি অনেক শহরের জন্য কঠিন ছিল। তিনি উল্লেখ করেছেন, রাশিয়ার আক্রমণের মাত্রা আরও বাড়বে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের বাহিনী রাতারাতি কমপক্ষে ৪১টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করেছে।

ফেডারেল বিমান পরিবহন সংস্থা রোসাভিয়াতসিয়া মস্কোর ঝুকভস্কি এবং অন্যান্য বিমানবন্দরে অস্থায়ী ফ্লাইট নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ভলগোগ্রাদ, কালুগা, পেনজা, সামারা, পসকভ ও ইয়ারোস্লাভল বিমানবন্দরেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।