এবার ইউক্রেনের একগুচ্ছ বসতি দখলের দাবি করেছে রুশ সেনাবাহিনী। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শুক্রবার (২১ নভেম্বর) জানায়,দোনেৎস্কের চারটি বসতি এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে। অবশ্য তাদের দাবির বিষয়ে কিয়েভের দিক থেকে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, রুশ বাহিনীর পশ্চিমমুখী অগ্রযাত্রার অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে দোনেৎস্ক। তাদের দাবি অনুযায়ী, দখল করা চার বসতির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ শহর ইয়ামপিলও রয়েছে। অবশ্য ইউক্রেন বৃহস্পতিবার জানিয়েছিল, রুশ বাহিনীর অনুপ্রবেশ চেষ্টা সত্ত্বেও ইয়ামপিল এখনও তাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।
রুশ সেনাপ্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভ বৃহস্পতিবার বলেছেন, তাদের বাহিনী ব্যাপকভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত কুপিয়ানস্ক শহরটি দখল করেছে, যদিও ইউক্রেন তা অস্বীকার করেছে। শুক্রবার কিয়েভ জানিয়েছে, রুশ বাহিনী কুপিয়ানস্কে ছয়বার আক্রমণ চালিয়েছে। তবে শহরটির দখল বিষয়ে কিছু বলেনি।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের শুক্রবারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দোনেৎস্ক অঞ্চলের আরও তিনটি গ্রাম—স্তাভকি, নোভোসেলিভকা ও মাসলিয়াকিভকা—এখন মস্কোর নিয়ন্ত্রণে, পাশাপাশি দিনিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলের একটি গ্রামও দখলে নেওয়া হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্তাভকি ও নোভোসেলিভকা রুশ হামলার এলাকায় পড়ছে, তবে কোনও ভূখণ্ড হারানোর কথা উল্লেখ করা হয়নি।
দীর্ঘদিন ধরে এক হাজার ২০০ কিলোমিটার ফ্রন্টলাইন জুড়ে লড়াই চলছে, যার কেন্দ্রে রয়েছে রুশ সেনাবাহিনীর পোকরভস্কের দিকে অগ্রযাত্রা।
গেরাসিমভ বৃহস্পতিবার বলেছেন, তাদের বাহিনী শহরটির ৭০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে, যা ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী প্রত্যাখ্যান করেছে। ইউক্রেনীয় জেনারেল স্টাফ শুক্রবার জানিয়েছে, রুশ সেনারা পোকরভস্কের নিকটবর্তী এলাকায় ৬২টি হামলা চালিয়েছে।
ওপেন–সোর্স তথ্য ব্যবহার করে দুই পক্ষের অবস্থান মানচিত্রে দেখানো ইউক্রেনীয় সামরিক ব্লগ ‘ডিপস্টেট’ শুক্রবার বলেছে, পোকরভস্কের কেন্দ্র ধীরে ধীরে রুশ নিয়ন্ত্রণে যাচ্ছে, কারণ তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহরে প্রবেশ করছে। ব্লগটি আরও জানিয়েছে, রুশ বাহিনী পোকরভস্কের পূর্বদিকে অবস্থিত একটি গ্রামেও অগ্রসর হচ্ছে।
দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক—এই দুই অঞ্চল নিয়ে গঠিত দনবাসের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে রাশিয়ার অভিযানের অংশ হিসেবে রুশ বাহিনী দোনেৎস্ক অঞ্চলে ধীর গতির পশ্চিমমুখী অগ্রযাত্রা চালিয়ে যাচ্ছে।
রুশ বাহিনী দক্ষিণের জাপোরিজ্জিয়া অঞ্চলেও অগ্রগতি অর্জন করেছে। তারা বর্তমানে ইউক্রেনের প্রায় ১৯ শতাংশ ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণে রাখছে।



