ঢাকা সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫

নরেন্দ্র মোদির প্রিয় গরু কত লিটার দুধ দেয়?

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২৫, ০৮:০১ পিএম
নিজ হাতে গরুকে খাওয়াচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি- সংগৃহীত

কথায় বলে ‘শখের তোলা আশি টাকা’। ধনি-গরিব, শ্রমিক-চাকরিজীবি কিংবা পাড়ার মোড়ল থেকে সরকারপ্রধান সবারই শখ আছে। আর শখ-আহ্লাদের জন্য কতজনই তো কত্তকিছু করল, কেউ কুকুর পালে, কেউ বিড়াল তো কেউ আবার পাখি, খরগোশ। এগুলো সাধারণ। তবে প্রধানমন্ত্রীর বেলায় হলে তো কৌতূহল ও বৈচিত্রতা থাকবেই। 

গত বছর মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে বাসভবনে গরুদের নিজে হাতে খাইয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই ছবি প্রকাশ্যে আসতেই ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ছবিতে বাড়ির পোশাকেই দেখা যায় তাকে। যে গরুগুলোকে তিনি চারা খাওয়ান সেগুলো আদতে পুঙ্গানুর প্রজাতির, যা সাধারণ গরুর তুলনায় আলাদা।

এই জাতের গরুর আকার যেমন সাধারণ গরুর তুলনায় ছোট। দৈনিক খাবারের পরিমাণ থেকে দুধ দেওয়ার পরিমাণও বেশি। বর্তমানে প্রায় বিলুপ্তির পথে এই প্রজাতির গরু। উচ্চতা গড়ে মাত্র ৭০ থেকে ৯০ সেন্টিমিটার। পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম গরু এই পুঙ্গানুর। এই বিরল প্রজাতিটির আদি নিবাস ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তোরে।

মনে করা হয়, অন্ধ্রপ্রদেশের রাজারা দুধ উৎপাদনের জন্য এই ব্রিড তৈরি করেন। তবে এখন এই গরুর সংখ্যা এতই কম যে একে আর আলাদা করে কোনো ব্রিড বলা হয় না। উচ্চতায় ছোট হলেও এক একটি গরুর ওজন ১১৫ কেজি থেকে ২০০ কেজির মধ্যে হয়।

২০২৪ সালের ১৪ জানুয়ারি মকর সংক্রান্তির দিন এই গরুগুলোর সঙ্গে ছবি তোলেন নরেন্দ্র মোদি। ছবিতে দেখা যায়, নিজের বাসভবনে নিজের হাতে গরুগুলোকে খাবার খাওয়াচ্ছেন তিনি।

মূলত সাদা বা ধূসর রঙের হলেও বাদামি এবং গাঢ় বাদামি রঙের পুঙ্গানুর গরুও পাওয়া যায়। স্বভাবের দিক থেকে গরুগুলো খুবই শান্ত প্রকৃতির। তাই এদের পোষ মানানো খুবই সহজ।

অতীতের বিজয়নগর রাজ্যে মূলত দুধ উৎপাদনের জন্যেই এই গরু ব্যবহৃত হত। এখনও সেই কারণেই এই গরু ব্যবহৃত হয়। দৈনিক পাঁচ কেজি খাবার খায় গরুগুলো। দুধ দেয় গড়ে দৈনিক ৪ থেকে ৫ লিটার পর্যন্ত।

তবে এই দুধের গুণমান সাধারণ গরুর তুলনায় বেশ ভালো। সাধারণ গরুর দুধে তিন থেকে পাঁচ শতাংশ ফ্যাট থাকে। সেখানে পুঙ্গানুর গরুর দুধে ফ্যাট থাকে আট শতাংশ। ফলে এই দুধ থেকে ঘি, মাখন, দই প্রভৃতি তৈরি করা যায় সহজেই।

পুঙ্গানুর-এর দুধ ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ। ফলে এই দুধ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

বর্তমানে অত্যন্ত বিরল এই গরুলোকে চিত্তোরের এসভি ভেটেরিনারি ইউনিভার্সিটির অধীনে পালামানের লাইভস্টক রিসার্চ সেন্টারে সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিছু এনজিও এবং কৃষকও এই গরুর সংখ্যা বৃদ্ধিতে সহায়তা করছেন।