বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মস্থান পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া থেকে সরানো হচ্ছে তাঁর ব্যবহৃত স্মৃতিচিহ্ন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জন্মভিটায় তৈরি হয়েছে উত্তেজনা, প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা ও নজরুল পরিবারের সদস্যরা।
সোমবার (৭ জুলাই) চুরুলিয়ায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কবির ভ্রাতুষ্পুত্র কাজী আলি রেজা অভিযোগ করেন, নজরুল একাডেমির সঙ্গে কোনো রকম আলোচনা না করেই আসানসোলে অবস্থিত কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কবির ব্যবহৃত সামগ্রী নিয়ে যাচ্ছে।
চুরুলিয়ার নজরুল একাডেমির সংগ্রহশালায় রয়েছে কবির হাতে লেখা পান্ডুলিপি, প্রথম প্রকাশিত গল্প-কবিতা, বিভিন্ন পত্রিকা, তাঁর ব্যবহৃত পোশাক, বাদ্যযন্ত্র, সম্মাননা স্মারক, স্ত্রী প্রমিলা দেবীর ব্যবহৃত খাট ও নানা দুর্লভ ছবি। এমনকি এখানে রয়েছে কবির শেষযাত্রার আলোকচিত্রও।
বিতর্কের জবাবে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. চন্দন কোনার জানান, চুরুলিয়ার নজরুল একাডেমি ও মিউজিয়াম ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ১.৫ কোটি রুপি বরাদ্দ দিয়ে মিউজিয়াম সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। সাময়িকভাবে সংগ্রহশালার সামগ্রীগুলো সংরক্ষণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হচ্ছে, পরে সংস্কার শেষে তা ফেরত আনা হবে।
কাজী আলি রেজা বলেন, এই মিউজিয়াম শুধু ভারতের নয়, বাংলাদেশের মানুষও দেখতে আসেন। এটি আবেগের জায়গা। এখান থেকে জিনিস সরালে মানুষের আগ্রহ কমে যাবে।
তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে একটি ট্রাকে জিনিস সরানো হয়েছে, আরেকটি ট্রাক আটকে দিয়েছেন স্থানীয়রা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নজরুল পরিবারের সদস্য সোনালি কাজী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, সংস্কারের নামে স্মৃতিচিহ্ন অপসারণ পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
রেজিস্ট্রার চন্দন কোনার বলেন, নজরুল কারও পারিবারিক বিষয় নয়। বিশ্বজুড়ে মানুষ নজরুলকে নিয়ে গবেষণা করেন। কিছু মানুষ কবির পরিচয় ব্যবহার করে এই ঐতিহ্য কুক্ষিগত করতে চাইছেন।