শিঙাড়া আর জিলাপিকে ঘিরে রাজনীতির রসদ যেন কম নয়। সোমবার (১৪ জুলাই) ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি নির্দেশিকার পর থেকেই গুজব ছড়ায়, এবার থেকে সরকারি ক্যান্টিনে শিঙাড়া-জিলাপি খাওয়া নিষিদ্ধ হতে চলেছে। আর তাতেই চারদিকে শুরু হয় তুমুল বিতর্ক। বিশেষ করে দেশটির বাঙালি মহলে শুরু হয় চর্চা ‘শিঙাড়া খাব না, জিলাপি খাব না, তা আবার হয় নাকি?’
এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডলে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন। তিনি লেখেন, ‘কিছু সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এখন থেকে নাকি শিঙাড়া-জিলাপি খাওয়া যাবে না। এটা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কোনো বিজ্ঞপ্তি নয়। আমরা সব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করি না, এবং এই বিজ্ঞপ্তি কার্যকরও করব না। শিঙাড়া-জিলাপি শুধু বাংলার নয়, অন্য রাজ্যেও জনপ্রিয়। মানুষের খাদ্যাভ্যাসে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।’
এরই মধ্যে মঙ্গলবার প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (পিআইবি) তাদের এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করে জানায়, এই গুজবের কোনো ভিত্তি নেই। তারা জানায়, ‘কিছু সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, শিঙাড়া ও জিলাপির ওপর ওয়ার্নিং লেবেল বসানো হবে। বাস্তবে এমন কোনো নির্দেশিকা নেই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কোনো ফুড ভেন্ডরকে নির্দিষ্ট কোনো ভারতীয় স্ন্যাকসের ক্ষেত্রে ওয়ার্নিং লেবেল বসাতে বলেনি।’
সূত্র বলছে, আসলে ‘সুগার অ্যান্ড অয়েল বোর্ড’ একটি সাধারণ পরামর্শ হিসেবে এই নির্দেশিকা জারি করেছে। উদ্দেশ্য, খাবারে লুকানো অতিরিক্ত চিনি ও চর্বি সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা। জনপ্রিয় খাবারে কী পরিমাণ চিনি ও ফ্যাট থাকে, তা জানাতেই ডিসপ্লে বোর্ড টাঙানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব পুণ্যসলিলা শ্রীবাস্তব একটি চিঠিতে সব কেন্দ্রীয় মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে থাকা ক্যান্টিনগুলোকে এই নির্দেশনা দেন। বলা হয়, যেসব ক্যান্টিনে জনপ্রিয় স্ন্যাকস ও খাবার সরবরাহ করা হয়, সেখানে চিনি ও ফ্যাটের পরিমাণ বোঝাতে বোর্ড টাঙাতে হবে।
কিন্তু এই পরামর্শকেই অনেক সংবাদমাধ্যম ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে, যা থেকেই শুরু হয় বিভ্রান্তি ও রাজনৈতিক চাপানউতোর। সেই আবহেই পিআইবি’র তরফে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, শিঙাড়া বা জিলাপির উপরে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, শুধু সচেতনতার জন্যই এই উদ্যোগ।
আপনার মতামত লিখুন :