ঢাকা মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫

ভোটার তালিকায় কুকুরের নাম, পিতা ‘কুত্তা বাবু’

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২৫, ০৬:০৭ পিএম
প্রতীকী ছবি

ভারতের বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে চলমান মামলার শুনানিতে রাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন তুলেছিল আধার কার্ড, ভোটার কার্ড বা রেশন কার্ড কেন বৈধ নথি হিসেবে ধরা হবে না। নির্বাচন কমিশনের দাবি ছিল, এসব নথি জাল হতে পারে। তবে তারা বিহার সরকারের জারি করা আবাসিক সনদকেই একমাত্র নির্ভরযোগ্য নথি হিসেবে উল্লেখ করেছিল।

কিন্তু সেই আবাসিক সনদেই ধরা পড়ল অবিশ্বাস্য জালিয়াতি। রাজ্য সরকারের জনসেবা অধিকার পোর্টাল থেকে জারি করা একটি সনদে মালিকানা দেখানো হয়েছে এক কুকুরের নাম ‘কুকুর বাবু’। মুহূর্তেই ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে প্রশাসনের ত্রুটি ও নথি যাচাই প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনাটি পাটনার নিকটবর্তী ছোট শহর মসৌরির।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজ্য সরকারের জারি করা এই সনদে কুকুরটির বাবার নাম ‘কুত্তা বাবু’ এবং মায়ের নাম ‘কুতিয়া দেবী’ লেখা ছিল। এমনকি ‘কুকুর বাবু’র ছবির জায়গায় রয়েছে একটি কুকুরে ছবি। ঠিকানা লেখা আছে মসৌরি পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কৌলিচক। নথিতে রাজস্ব কর্মকর্তা মুরারি চৌহানের ডিজিটাল স্বাক্ষরও ছিল। তবে কয়েক মিনিটের মধ্যেই প্রশাসন সনদটি সরিয়ে দেয়।

তদন্তে জানা গেছে, সনদটি মূলত দিল্লির এক মহিলার নথির সঙ্গে যুক্ত ছিল। তার আধার কার্ডসহ ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করে কেউ সিস্টেমে জাল নথি তৈরি করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মহকুমা কর্মকর্তা প্রভাত রঞ্জন বলেন, ‘এটি সস্তা রসিকতা হলেও সরকারি রেকর্ডের গুরুতর কারচুপি।’

বিহার সরকারের জারি করা আবাসিক সনদ। ছবি- সংগৃহীত

ঘটনাটি ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে রাজ্যে চলমান বিতর্কের মাঝেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে। বিরোধীরা বলছে, ঘটনাটি নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ত্রুটি ও তথ্য নিরাপত্তার ঘাটতি প্রমাণ করে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় কংগ্রেস লিখেছে, ‘কুকুরটি হয়তো বুথে গিয়ে বিজেপিকে ভোট দেবে। তারা সম্ভবত কুকুর বাবুকে প্রার্থীও করবে এবং সব বিজেপি কর্মী তাকে ভোট দেবে। বিজেপি ও নীতিহীন নির্বাচন কমিশন মিলে একটি অপরাধ সিন্ডিকেট চালাচ্ছে। এটি নির্বাচনী ব্যবস্থায় কারসাজির স্পষ্ট উদাহরণ। বিচার ব্যবস্থা চুপচাপ দাঁড়িয়ে থেকে গণতন্ত্র ধ্বংসের সাক্ষী হচ্ছে।’

পাটনার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট থিয়াগরাজন ঘটনাটিকে ‘অত্যন্ত গুরুতর’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি জানান, ‘২৪ জুলাই বিকেল ৩টা ৫৬ মিনিটে সনদটি জারি হয় এবং দুই মিনিটের মধ্যে বাতিল করা হয়। এ নিয়ে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সাইবার পুলিশ খুঁজে দেখছে কে বা কারা সরকারি নথিতে এ ধরনের হস্তক্ষেপ করেছে।’

পাটনা জেলা প্রশাসন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দোষী কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।